সিত্রাং'র ১ সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও বিদ্যুৎ মেলেনি দুর্গত এলাকায়!

সিত্রাং’র ১ সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও বিদ্যুৎ মেলেনি দুর্গত এলাকায়!

দেশজুড়ে

অক্টোবর ৩০, ২০২২ ৫:২০ অপরাহ্ণ

আমির হোসেন, ঝালকাঠি

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় টানা ৭দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। রাজাপুরে প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা।

রাজাপুর সদর ইউনিয়নের কৈবর্তখালী এলাকার বাসিন্দা সেলিম মোল্লা নামের এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার এক দিন আগেই ছোট কৈবর্তখালী এলাকার বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর সাত দিন কেটে গেলেও বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। সিত্রাং এলো না জানো বিদ্যুৎ নিলো। বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে যোগাযোগ করেছি তারা বলছে দিবে কিন্তু ৭দিন হলো এখনো বিদ্যুৎ দেয়নি।

গালুয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী এলাকার বাসিন্দা মো. লিমন মোল্লা, কানুদাসকাঠি এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম, চাড়াখালী এলাকার বাসিন্দা মাহিন সহ একাধিক গ্রাহক বলেন, ঘূর্নিঝড়ের আগের দিন থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। অন্ধকারে বসবাস করতাছি জানি না কবে পাব বিদ্যুৎ। ৭দিন যাবত বিদ্যুৎ নেই।

বড়ইয়া ইউনিয়নের আদাখোলা এলাকার বাসিন্দা অলি নামের এক গ্রাহক বলেন, গত রোববার থেকে আমাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ ছাড়া রাত কাটাতে কষ্ট হচ্ছে।

সাতুরিয়া ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা আবিদ নামের এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, ৬ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। রাতে অন্ধকারে পড়া-লেখা করতে পারছি না, আর গরমের কারণে কষ্টের শেষ নেই। বিদ্যুৎ বিভাগের মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার কল দিয়েও তাদের পাওয়া যায় না।

মঠবাড়ি ইউনিয়নের পুখরিজানা এলাকার বাসিন্দা সাকিল, মঠবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মো. আলম হাং, বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা সবুর ফকির, ডহরশংকর এলাকার বাসিন্দা আজমির শরীফ, মানকি এলাকার বাসিন্দা কবির, উত্তর সাউদপুর এলাকার বাসিন্দা কাইয়ুম হাং সহ একাধিক গ্রাহকরা বলেন, আমাদের এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন অন্ধকারে বসবাস করতে অনেক কষ্ট হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে অনেক বার যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায় না।

শুক্তাগড় ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক বলেন, বন্যার আগের দিন বিদ্যুৎ নিছে এখনো বিদ্যুৎ দেয়নি কবে দিবে জানি না, বিদ্যুৎ বিহীন পুরো এলাকা।

রাজাপুর উপজেলা শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হলেও বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানান, প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকার বিদ্যুতের লাইন চালু করা হয়েছে। এবং প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন রয়েছেন বলে স্বীকার করেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। তবে এখনো তারা ক্ষতির পরিমাণ বলতে পারছে না।

রাজাপুর উপজেলায় বিদ্যুৎ সেবা চালু করতে কর্মীরা রাত-দিন কাজ করছেন। অনেক চেষ্টায় উপজেলা শহর সহ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হলেও এখনো রাজাপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৫০ শতাংশ এলাকায় লাইন চালু করা হয়েছে। বাকি সব এলাকায় কয়েকদিন এর মধ্যে লাইন চালু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *