সাকিব-সোহানের পর দিনের শেষে খালেদ বাড়ালেন আফসোস

খেলা স্লাইড

জুন ১৯, ২০২২ ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

ব্যাটিং ব্যর্থতায় আরও একটি পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময়ে টপ অর্ডার ব্যাটাররা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হওয়ায় একের পর এক টেস্টে হারের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও টপ অর্ডারের ব্যর্থতাই আফসোস জাগালো। উইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনশেষে জয় থেকে মাত্র ৩৫ রান পিছিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে ৮৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দিনশেষে ৩ উইকেটে ৪৯ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৮ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন জন ক্যাম্পবেল। ১৭ রান নিয়ে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন জার্মেইন ব্লাকউড। বাংলাদেশের পক্ষে তিনটি উইকেটই নিয়েছেন খালেদ আহমেদ।

নিশ্চিত পরাজয়ের সামনে দাঁড়িয়ে দারুণ বোলিং করছে বাংলাদেশের পেসাররা। স্বল্প রানের পুঁজি নিয়েই নিজেদের সর্বোস্ব দিয়ে লড়ছেন খালেদ-মুস্তাফিজ। তাতে ২ রানেই দুই উইকেট হারিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রাথওয়েট এক রান করে খালেদের বলে সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। তার পথ দেখে একই গন্তব্যে দুই রান করা রেইফার।

৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরাকল ঘটানোর আশায় বিভোর বাংলাদেশের স্বপ্ন ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে দুই অপরাজিত ব্যাটার ক্যাম্পবেল ও ব্লাকউডের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে। দিনের বাকি সময় অবিচ্ছিন্ন থেকে ৪০ রান জমা করেছেন দুজনের জুটিতে। চতুর্থ দিনের সকালে তাতে সহজ জয়ের আশা নিয়েই দিনের খেলা শেষে সাজঘরে ফিরেছে দুই ক্যারিবিয়ান।

এর আগে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরানোর দূরাশাটা বাংলাদেশকে দেখাচ্ছিলেন সাকিব-সোহান। কিন্তু কেমার রোচের বলে উইন্ডিজ অধিনায়ক ব্রাথওয়েটের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ৬৩ রান করা সাকিব। দ্বিতীয় বল নেওয়ার পরেই ম্যাচের সর্বোচ্চ রানের জুটি ভাঙেন কেমার রোচ। এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি সোহানও। ৬৪ রান করে রোচের চতুর্থ শিকার তিনি।

নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে শতরানের জুটিতে বাংলাদেশকে ইনিংস পরাজয়ের মুখ থেকে লিড এনে দেওয়া অধিনায়ক সাকিবের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টেকেনি বাংলাদেশের ইনিংস। অলআউট হওয়ার আগে টাইগারদের সংগ্রহ ২৪৫ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের লিড ৮৩ রানের। জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের টার্গেট দাঁড়িয়েছে ৮৪রান।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন পেসার কেমার রোচ। এই পারফরম্যান্সে ২৪৯ উইকেট নিয়ে তিনি ছুঁয়েছেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি মাইকেল হোল্ডিংকে। তার সঙ্গে যৌথভাবে তিনি এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।

অ্যান্টিগা টেস্টে প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতার ঘানি দ্বিতীয় ইনিংসেও টানতে পারেনি টাইগার ব্যাটাররা। আগের দিন বিদায় নেয়া তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের পথে তৃতীয় দিন শনিবার (১৮ জুন) প্রথম সেশনেই যোগ দেন আরও চার ব্যাটার।

তবে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহানের প্রতিরোধে ইনিংস পরাজয় এড়াতে সক্ষম হয়েছে টাইগার বাহিনী। সিলসের ওভারের শেষ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সোহান ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা কাটান। সাকিব-সোহানের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ এখনো লড়ছে হার এড়াতে। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন অধিনায়ক সাকিব। সাকিবের দেখানো পথে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সোহানও।

১৬২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুতে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয় লড়াইয়ে ফেরার আশা দেখালেও পরপর দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ২ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৫০ রান।

আর আজ তৃতীয় দিনে দলের খাতায় ১৪ রান যোগ করতেই বিদায় নেন শান্ত। ইনিংসের ২৯তম ওভারে মায়ার্সের করা চতুর্থ বলে খোঁচা লাগিয়ে ক্যাচ তুলে দেন প্রথম স্লিপে থাকা জন ক্যাম্পবেলের হাতে। ৪৫ বল মোকাবিলায় ৩ বাউন্ডারিতে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান। এরপর এরপর ৩৫তম ওভারে এসে মায়ার্স এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মুমিনুল হককে। রিভিউ আবেদন করে লাভ হয়নি।

অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি ইনসুইংয়ে হিট করে লেগ স্টাম্পে। আম্পায়ার কলের কারণে রিভিউ বাংলাদেশ ফেরত পেলেও দুর্ভাগ্যকে সঙ্গে নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় মুমিনুলকে। রান খরা যেন কাটছেই না সদ্য সাবেক এই অধিনায়কের। প্রথম ইনিংসের মতো আজও ফিরতে পারতেন শূন্য রানেই। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে মায়ার্সের করা বলটি ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ঘেষে পেছনে চার হয়।

এরপর ক্রিজে এসে স্বাচ্ছন্দ্যেই ব্যাট করছিলেন লিটন দাস। তার ব্যাটে আশা দেখছিল বাংলাদেশ। তবে তিনি আশার আলো জ্বালানোর আগেই তা নিভে গেছে। স্লিপে ধরা পড়ে সাজঘরে ফিরেছেন কেমার রোচের করা অফ স্টাম্পের বলে খোঁচা দিয়ে। মাঠ ছাড়ার আগে ১৫ বল মোকাবিলায় ৩ বাউন্ডারিতে ১৭ রান করেছেন লিটন।

অন্যদিকে সেট হয়েই সাজঘরে ফিরেছেন মাহমুদুল হাসান জয়। তিনি লিটনের মতো একই ভুলের খেসারত দিয়েছেন। তার ক্ষেত্রেও শিকারি রোচ। ১৫৩ বল মোকাবিলায় ৩ বাউন্ডারিতে ৪২ রান আসে জয়ের ব্যাট থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *