ব্রিটিশ রানির দুটি জন্মদিন, কিন্তু কেন?

আন্তর্জাতিক স্লাইড

সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ ৭:৩১ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল রাত ২টা ৪০ মিনিটে ১৭ ব্রুটন স্ট্রিট মেইফেয়ার, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। এটিই তার প্রকৃত জন্মদিন।

তবে মজার বিষয় হচ্ছে এর বাইরেও ১২ জুন রানির আরো একটি জন্মদিন পালন করা হয়। অফিসিয়ালভাবে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে তার জন্মদিন পালন করা হয়। কেন এমনটি করা হয়, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।

ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিভিন্ন দেশেই প্রকৃত জন্ম তারিখ লুকানোর ঘটনা আমরা দেখি। প্রায়ই দেখা যায়, একজন মানুষ তার সনদপত্রে যেই জন্ম তারিখ উল্লেখ করেন প্রকৃতপক্ষে সেটি তার সঠিক জন্মদিন নয়। অনেকে আবার বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘটা করে ভুয়া জন্মদিন পালন করেন। কিন্তু ব্রিটিশ রানীর বেলায় আসলে ঘটনাটা কী?

এর কারণ হলো, ব্রিটিশ রাজসিংহাসনে যেই থাকুক না কেন, ঐতিহ্য মেনেই যুক্তরাজ্য তার অতিরিক্ত একটি জন্মদিন পালন করে। সাধারণত গ্রীষ্মেই পালিত হয় এই জন্মদিন। কারণ গ্রীষ্মের আবহাওয়া ভালো থাকে।

রাজা দ্বিতীয় জর্জ ১৭৪৮ সাল থেকে এই ‘ভুয়া’ জন্মদিন পালনের রেওয়াজ শুরু করেন। দ্বিতীয় এই জন্মদিনটিতে ঐতিহ্য মেনেই রাজা বা রানী যিনিই সিংহাসনে থাকুন না কেন তিনি নানা রঙে সজ্জিত সেনাদলের কুচকাওয়াজে অংশ নেন। লন্ডনে রানীর বাসভন বাকিংহাম প্যালেস থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে সেনাদলের কুচকাওয়াজ। অতীতে ব্রিটিশ রাজপরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদেরও জন্মদিন এভাবে পালন করা হতো বলে জানা যায়।

১৯৫২ সালে ২৫ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় সিংহাসনে থাকা রানি হিসেবে ২০১৫ সালে তিনি মাতামহী রানি ভিক্টোরিয়াকে ছাড়িয়ে যান।

অষ্টম এডওয়ার্ড বিধবা ওয়ালিস সিম্পসনকে বিয়ে করতে সিংহাসন ছাড়লে তার ছোট ভাই রানির বাবা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৩৬ সালে রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।

কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডসহ সাবেক ১৫টি ব্রিটিশ উপনিবেশেরও রাষ্ট্রপ্রধান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের দ্বিতীয় এলিজাবেথ হচ্ছেন বিশ্বের ১৬টি সার্বভৌম রাষ্ট্র, অর্থাৎ কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলোর বর্তমান রানী ও রাষ্ট্রপ্রধান। কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলো হলো-যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, নিউজিল্যান্ড, জ্যামাইকা, বারবাডোস, বাহামাস, গ্রানাডা, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, টুভালু, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন, বেলিজ, অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা এবং সেন্ট কিট্রস ও নেভিস। কমনওয়েলথ প্রধান ছাড়াও তিনি ৫৪ সদস্যবিশিষ্ট কমনওয়েলথ অব নেশনসেরও প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় এলিজাবেথ যুক্তরাজ্যের শাসনকর্তা এবং চার্চ অব ইংল্যান্ডেরও প্রধান।

বিশ্বজুড়ে তুমুল জনপ্রিয় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এরই মধ্যে ব্রিটিশ রাজ সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর পূর্ণ করেছেন। ব্রিটেনের হাজার বছরের ইতিহাসে তিনি হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি সমর্থ হলেন এ বিরল দীর্ঘতম সময়কে ছুঁয়ে দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *