দেশে সবার বাকস্বাধীনতা রয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

জাতীয়

আগস্ট ২০, ২০২২ ১১:১১ অপরাহ্ণ

রাশিদা হক কনিকা

জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে দেয়া ১৮ আগস্ট, বৃহস্পতিবারের বক্তব্যকে মিডিয়া ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দেশে সবার বাকস্বাধীনতা রয়েছে। তাই সবাই সব কথা বলতে পারেন। তবে বক্তব্য অন্যভাবে উপস্থাপন হলে দুঃখ লাগে। জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং সংগঠনের অন্যান্য নেতারা। এসময় তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

তিনি মিডিয়াকে একটু সহনশীল হওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন, এই সরকার সকল মিডিয়া প্রিন্টকেও বাকস্বাধীনতা দিয়েছেন, এর প্রমাণ আপনারা নিজেরাই।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হলে জন্মাষ্টমীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা অনুরোধ করেছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি সেই বক্তব্যের মূল বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করে সাংবাদিক সহ উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, ভারত সফরে তাকে (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলে এই অঞ্চল স্থিতিশীল আছে। প্রতিউত্তরে তিনি বলেছেন এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে ধরে রাখার জন্য শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। আর শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য আপনাদের যা করার দরকার তাই করেন।

তিনি বলেন, যে ইস্যু নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে সে বিষয়টি আমি বলিনি। নির্বাচন নিয়ে কোনো কথাই হয়নি। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমি ভারতীয় সরকারকে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে যে কোনো উপায়ে নির্বাচিত করতে হবে— এটা কখনো বলিনি। এটা তারা বানাচ্ছেন। ভারতে আমাদের আলোচনায় কখনো আওয়ামী লীগের কথা উঠেনি। নির্বাচনের কথা উঠেনি।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামের অনুষ্ঠানটি ছিল জন্মাষ্টমী উপলক্ষে। আমি বলেছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিস্তারিত বক্তব্যের পর আমার বক্তব্য দেয়ার প্রয়োজন নেই। তারা তখন কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছেন। সেই প্রেক্ষিতে আমি বললাম, আমি গৌহাটিতে গিয়েছিলাম এবং সেখানে আসামের মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এজন্য যে, সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ হওয়ায় আসামে স্থিতিশীলতা এসেছে এবং অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। সুতরাং আমি ভারত সরকারকে বলেছি যে, উভয় দেশের মঙ্গলের জন্য, উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। সেজন্য উভয় দেশে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে ফুলায়ে ফালায়ে প্রচার করে স্থিতিশীলতা যাতে বিঘ্ন না করা হয় তার কথা বলেছি। ভারতে সাম্প্রদায়িক সমস্যা দেখা দিলে এটা আমাদের দেশকেও আঘাত দেয়। আমি বলেছি শেখ হাসিনা স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের প্রতীক। শেখ হাসিনা থাকলে অসাম্প্রদায়িক সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠবে। সুতরাং তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার তা করার জন্য বলেছি। বন্ধু প্রতিম দেশ হিসাবে তাদের সহায়তা চেয়েছি।

জাতির পিতার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক মিয়া, সহ-সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক রাশিদা হক কনিকা, যুগ্ম-সম্পাদক শহিদুল্লাহ ওসমানী, যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমীন শাহিন, সুপ্রিম কোর্ট বার শাখার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গৌরাঙ্গ চন্দ্রকর, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শাহানা জেসমিন, আজীবন সদস্য ডাঃ কামরুজ্জামান, সৌদি আরব শাখার সভাপতি মো. আব্দুস সালাম, ডাঃ আব্দুস সালাম, কাজী মফিজুল হক, হাসান নাছের মিলন, খায়ের মোল্লা, আহসান সামাদ, সৈয়দ আইনুল হক, রংপুর বিভাগ সমন্নয়ককারী মীর শামীম, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন মহানগর শাখার সহ সভাপতি মোঃ আরমান, সিলেট জেলা শাখার সভাপতি শামসুল আলম, গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি প্রমতোষ কুমারসহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ও অন্যান্য শাখা কমিটির নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *