ঘুম না আসার কারণ ৩ মারাত্মক ব্যাধি

স্বাস্থ্য

মে ১৩, ২০২২ ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত ও ভালো ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। ঘুম শরীরকে পুনর্জীবিত করার পাশাপাশি পরবর্তী দিনের কাজের জন্য আমাদের প্রস্তুত করে। কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে একটু একটু করে মৃত্যুর মুখে পৌঁছে যেতে পারেন আপনি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত সঠিক মাত্রায় ঘুম না হলে একজন মানুষ ক্রমাগত শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন, যা একটি সুন্দর জীবনকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়।

রাতে ভালো বা গভীর ঘুমের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করতে পারে তিনটি মারাত্মক রোগ। এগুলো হলো ইনসমনিয়া, রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম ও নার্কোলেপসি। আসুন জেনে নিই এই তিনটি মারাত্মক ব্যাধি সম্পর্কে।

ইনসমনিয়া: এই রোগটিকে এককথায় বলে অনিদ্রা। রাতে বিছানায় শুয়ে আছেন কিন্তু কোনোভাবেই দু-চোখের পাতা এক হতে চাইছে না। ঘুমানোর সব চেষ্টাই যেন ব্যর্থ হচ্ছে। আবার যদি ঘুম আসেও, তবে ঘুমানোর পর মধ্যরাতে যেন হঠাৎ জেগে যাচ্ছেন। অনেক চেষ্টার পর আর ঘুমাতে পারেন না। অনেকে হয়তো এটাকে খুব সাধারণ ব্যাপার মনে করে গুরুত্ব দেন না।

ঘুমের এ সমস্যা নিয়মিত চলতে থাকলে তা অসুখে পরিণত হয়। সারা দিনের কাজকর্ম শেষেও শরীর ও মস্তিষ্কের বিশ্রাম নেওয়ার এ প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে না এলে চিকিৎসাশাস্ত্রে এ সমস্যাটিকে বলা হচ্ছে ইনসমনিয়া। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাকেই এ রোগের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম: এ সমস্যায় আপনি ভুগতে থাকলে বিছানায় শোয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক অস্বস্তিকর অনুভূতি আপনাকে ঘিরে ধরবে। এই অস্বস্তি সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয় পায়ে। কিছু একটা যেন পা বেয়ে উঠে আসছে–এই অনুভূতি সারাক্ষণই আপনি অনুভব করতে থাকেন। অস্বস্তি এড়াতে অনেকে এ সময় পা নাড়াতে থাকেন। তাতে অস্বস্তি দূর হলেও ঘুমের বারোটা বাজে। চিকিৎসাশাস্ত্রে একেই বলা হচ্ছে আরএলএস বা রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম। বাংলাদেশে রেস্টলেস লেগস সিনড্রোমের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

নার্কোলেপসি: নার্কোলেপসি এমন এক রোগ যাতে রোগীর মস্তিষ্কে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার চক্রটা ভেঙে যায়। তাই রোগী সারা দিন ক্লান্ত অনুভব করে। এমনকি অনেক সময় পেশির ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণও চলে যায়। কোনো কাজ করার মাঝে রোগী হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েন। এই ঘুমে রোগী অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। শুরু হয় মাথার যন্ত্রণা। এ রোগে আক্রান্ত হলে অনেক রোগীর স্মৃতিশক্তিও লোপ পায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তিন মারাত্মক ব্যাধির কারণেই রোগীরা ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ঘুমানোর তিন ঘণ্টা আগে হালকা ব্যায়াম করুন, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন, বই পড়ার অভ্যাসে গড়ে তুলুন।

গবেষকরা এ সমস্যা সমাধানে ঘুমের সময় আরামদায়ক স্থান বেছে নিতে বলছেন। যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, সেভাবে ঘুমানোর ওপরও জোর দিচ্ছেন। ধীরগতির গান শোনাও এ ক্ষেত্রে দারুণ কাজে আসে বলে মনে করছেন তারা।

সূত্র: নিউজ ১৮ বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *