কখন বুঝবেন আপনি মানসিক রোগে আক্রান্ত

স্পেশাল স্বাস্থ্য

মে ১০, ২০২২ ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

মানসিক সমস্যা অন্যসব সমস্যার মতোই একটি সমস্যা। অথচ অনেকেই এই সমস্যাটাকে তেমন গুরুত্ব দেন না। আবার অনেকে বুঝতেই পারেন না তার মানসিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। শারীরিক অন্যান্য সমস্যার মতো মানসিক সমস্যায়ও আক্রান্ত হলে সঠিক কাউন্সেলিং ও চিকিৎসায় পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করা যায়।

বাংলাদেশের মানসিক চিকিৎসকরা বলছেন, যদিও আগের তুলনায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু এখনো দেশের মানুষজনের মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা রয়েছে।

শারীরিক বেদনার মতো জটিলতা তৈরি না হওয়ায় অনেকেই বুঝতে পারেন না, কখন আসলে তাদের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। মানসিক, পারিবারিক বা সামাজিক নানা ট্যাবুও এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এ ধরণের সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। আসুন জেনে নেই কী ধরণের আচরণ বা উপসর্গ দেখা গেলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

যখন কোন ব্যক্তির আচরণ, ব্যবহারে বড় ধরণের পরিবর্তন দেখা যায়, বিশেষ করে তার আবেগীয় প্রকাশের পরিবর্তন আসে এবং সেটা তার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে, সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে শুরু করে, তখনি তার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে।

মানসিক রোগের যেসব লক্ষণ হতে পারে:

১. হঠাৎ হঠাৎ করে বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠা।
২. অনেকদিন ধরে নিজেকে সবার কাছ থেকে সরিয়ে গুটিয়ে রাখা।
৩. টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মন খারাপ থাকা।
৪. অন্যদের সঙ্গে একেবারে কথা বলতে না চাওয়া।
৫. সবার সাথে ঝগড়া করা।
৬. গায়েবি আওয়াজ বা কথা শুনতে পাওয়া।
৭. অন্যদের অকারণে সন্দেহ করতে শুরু করা।
৮. গোসল বা দাঁত মাজার মতো নিয়মিত প্রাত্যহিক কাজ করা বন্ধ করে নিজের প্রতি যত্ন না নেয়া।
৯. যেসব কাজে আনন্দ পাওয়া সেসব কাজে নিরানন্দ ও আগ্রহ কমে যাওয়া।
১০. সামাজিক সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া।
১১. নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা বা নিজেকে দায়ী মনে হওয়া সবকিছুতে।
১২. সিদ্ধান্তহীনতা বা মনোযোগ কমে যাওয়া এবং খুব তীব্র হলে আত্মহত্যার চিন্তা পরিকল্পনা ও চেষ্টা করে।
১৩. অতিরিক্ত শুচিবায়ুগ্রস্থ হয়ে ওঠা।
১৪. ঘুম অস্বাভাবিক কম বা বাড়তে পারে।
১৫. খাবারে অরুচি তৈরি হওয়া বা রুচি বেড়ে যাওয়া।
১৬. বাসার, অফিসের বা পেশাগত কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হওয়া বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলা।

তবে এই সমস্যাগুলোর মানেই যে তার মানসিক রোগ হবে, তা নয়। তবে এসব উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা গেলে একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তারা সেটা বিশ্লেষণ করে বুঝতে পারবেন যে, এখানে আসলে কোনো ব্যবস্থা নেয়া উচিত কিনা।

আমাদের সবার মধ্যে কিছু কিছু আচরণের অস্বাভাবিকতা থাকতে পারে। সেটা হলেই সবাইকে মানসিক রোগী বলা যাবে না। কিন্তু তার এই মনের অবস্থার কারণে যদি তার স্বাভাবিক বা প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হতে থাকে, তখনি বুঝতে হবে যে, সে হয়তো মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *