নভেম্বর ২৩, ২০২২ ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ
গ্রুপের সবচেয়ে সহজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। ম্যাচের শেষে তা বদলে গেল দুঃস্বপ্নে। ১-২ গোলে হেরে মাঠ ছাড়লেন লিয়োনেল মেসিরা। তার পরেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, বিশ্বকাপ জেতা তো দূর, এই আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারবে তো?
নকআউট রাউন্ডে উঠতে হলে পরের দুই ম্যাচে জিততেই হবে কোচ লিওনেল স্কালোনির দল। তাই আপাতত হারের ক্ষত ভুলতে না পারলেও এই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে পরের ম্যাচগুলোতে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই তারকা।
মেসি বলছেন, ‘জানি অনেক মানুষ আমাদের ওপর ভরসা করেন। শুধু আমি বা দল নয়, এটা সব সমর্থকের কাছে বিরাট একটা ধাক্কা। কখনও ভাবতে পারিনি হেরে যাব।’
আর্জেন্টাইন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘একটা কথা বলতে পারি, সমর্থকদের মিথ্যা বলে এখানে আসিনি আমরা। আগেও অনেক ম্যাচ খেলেছি, আজও খুব একটা খারাপ খেলিনি আমরা। আশা করি এই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাব। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এটাই সেরা সময়। এই হার আশা করিনি ঠিকই; কিন্তু গোটা পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের হাতেই রয়েছে।’
ম্যাচে ফেবারিট হিসেবেই খেলতে নেমেছিল আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের বিপক্ষে শুরুতে এগিয়েও গিয়েছিল তারা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টে গেল দৃশ্যপট। উজ্জীবিত আরবরা আলবিসেলেস্তেদের জালে বল জড়াল দুইবার। শেষ পর্যন্ত লিড ধরে রাখল সৌদি আরব। আর তাতেই ঘটল অঘটন। কাতার বিশ্বকাপে সবাইকে চমকে দিয়ে আর্জেন্টনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছে সৌদি।
কাতারের রাজধানী দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে ম্যাচের দশম মিনিটেই স্কোরশিটে নাম তোলেন মেসি। অষ্টম মিনিটে কর্নার পায় আর্জেন্টিনা। এসময় আলবিসেলেস্তেদের একজনকে ডি বক্সে অবৈধভাবে বাঁধা দেন সৌদি ডিফেন্ডার কানো।
ভিএআরের মাধ্যমে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। স্পট কিক থেকে লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি মেসি। যার ফলে শুরুতেই এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
এরপর প্রথমার্ধে আরো তিনবার বল জালে জড়ায় আর্জেন্টিনা। এর মাঝে একবার মেসি ও দুইবার লউতারো মার্টিনেজ সৌদি গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন।
ম্যাচের ২২, ২৭ ও ৩৫ মিনিটে হওয়া গোলগুলো তিনবারই অফ সাইডের কারণে বাতিল হয়। ফলে হতাশায় পোড়ে আর্জেন্টিনা। সৌদির হাই লাইন ডিফেন্সের কারণেই বারবার এই সমস্যায় পড়ে আলবিসেলেস্তেরা।
দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে প্রথম ধাক্কা খায় আর্জেন্টিনা। সৌদির সালেহ আল শেহরি দারুণ দক্ষতায় এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে পরাস্ত করে ম্যাচে সমতা ফেরান। যে ধাক্কা মানসিকভাবে আকাশী নীলদের পিছিয়ে দেয়।
পাঁচ মিনিট পর আর্জেন্টিনাকে স্তব্ধ করে দেন সালেম আল দাওসারি। অবিশ্বাস্য এক শটে বল জালে জড়িয়ে সৌদি আরবকে লিড এনে দেন তিনি। এরপর আক্রমণের ধার আরো বাড়ায় সবুজ জার্সিধারীরা।
ম্যাচে ফিরতে আপ্রাণ চেষ্টা চালায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু সৌদির হাই লাইন ডিফেন্স ভাঙতে যথেষ্ট বেগ পায় তারা। এর মাঝে যেটুকু সুযোগও তারা তৈরি করেছে তা নস্যাৎ করে দেন সৌদি গোলরক্ষক মোহাম্মদ আলওয়াইস।
অতিরিক্ত সময়ে আব্দুল্লাহ আলামরি গোললাইন থেকে বল ফিরিয়ে দিলে আর্জেন্টিনার ম্যাচে ফেরার আশা প্রায় শেষ হয়ে যায়। বাকি থাকা সময়ে মেসির দল আর গোল করতে না পারলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে আলবিসেলেস্তেরা। অন্যদিকে স্মরণীয় জয় পায় সৌদি।