সম্প্রতি ভারতের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কেকের হঠাৎ মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। পাশাপাশি তার মৃত্যু প্রশ্ন তৈরি করেছে বিশেষজ্ঞসহ অনেক সাধারণ মানুষের মনেও। চিকিৎসকরা বলছেন, গোল্ডেন আওয়ারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলেই কেকে আমাদের মাঝে এখনো বেঁচে থাকতেন।
কেকের মৃত্যু সম্পর্কে মনোবিদ অগ্নায়ী বন্দ্যোপাধ্য়ায় মনে করেন, মূলত কাজপাগল হয়ে নিজের শরীরকে অবহেলা করায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তার। তাই কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ ও স্ট্রেস এ দুটির মধ্যে ভারসাম্য করতে না পারলে যে কেউই বিপদের সম্মুখে পড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বুকের বাঁদিকে চিনচিনে ব্যথাকে অনেকেই পেটে গ্যাসের সমস্যা ভেবে এড়িয়ে চলেন, যা পরবর্তী সময়ে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কেকের মৃত্যুর মূল কারণ হলো হার্ট অ্যাটাকের দুই ঘণ্টা পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা। তাই গোল্ডেন আওয়ার পেরিয়ে যাওয়ার কারণেই তাকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
কোনো ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাক হতে শুরু করলে তার প্রথমে প্রচণ্ড ঘাম হতে শুরু করে। সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়। অসুস্থ, ক্লান্তি ও শীত অনুভব করতে শুরু করে। এসব উপসর্গ রোগীর হার্ট অ্যাটাক হওয়াকে নির্দেশ করে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এ সময় থেকে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টাকে গোল্ডেন আওয়ার ধরে নেন চিকিৎসকরা। কারণ হিসেবে তারা বলেন, হার্ট অ্যাটাকের সময় থেকে প্রথম এক ঘণ্টা রোগীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, হার্ট অ্যাটাকের পর হৃদ্যন্ত্রের পেশিগুলো এক ঘণ্টা সচল থাকে।
তাই গবেষকরা বলছেন, যেকোনো হার্ট অ্যাটাকের রোগীকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে হার্ট অ্যাটাকের প্রথম এক ঘণ্টা মধ্যে হাসপাতালে নিতে হবে। সেই সঙ্গে দ্রুত করাতে হবে ইকো কার্ডিওগ্রাফি, ইসিজির মতো পরীক্ষাগুলো।
এসব পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকরা হার্টের ধমনিতে রক্ত জমাট বেঁধেছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হন। যদি হার্টের ধমনিতে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকরা দ্রুত অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বা থ্রম্বোলাইসিস করে রক্ত বের করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
তবে চিকিৎসকরা এসব সেবা দিতে ব্যর্থ হন যদি গোল্ডেন আওয়ারের মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে না আনা হয়। তাই আপনার প্রিয়জনকে যদি নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচাতে চান, তবে চিকিৎসক নয়, আপনাকেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই প্রিয়জনকে ধরে রাখতে গোল্ডেন আওয়ারের আগেই হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করুন। আর করিয়ে নিন প্রয়োজনীয় সব টেস্ট।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন