‘সাংবাদিকতা প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখে’

ফিচার স্পেশাল স্লাইড

সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ ৮:৪৭ অপরাহ্ণ

তৌহিদ সাগর

সাপ্তাহিক শীর্ষ খবরের আয়োজনে ‘গণমাধ্যম ও আমাদের সমাজ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদের অডিটোরিয়ামে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করা হয়।

শীর্ষ খবরের সম্পাদক মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির) এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য শাহনাজ বেগম পলি, ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের কোষাধ্যক্ষ কবীর আলমগীর, সারাবাংলা ডটনেটের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক প্রতীক মাহমুদ, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সাদাকাত হোসেন খান বাবুল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক যুগ্ম পরিচালক হামিদুল আলম সখা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মুন্সী কামরুজ্জামান কাজল।

সভাপতির বক্তব্যে শাশ্বত মনির বলেন, ‘গণমাধ্যম ও আমাদের সমাজের বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের এই আয়োজন। কোনো দেশের জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের যত একক শক্তি আছে তার সবক’টি শক্তির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের শক্ত কাঠামো তৈরি হয়। তার মধ্যে স্বাধীন গণমাধ্যম একটি। কাঙ্ক্ষিত সমাজ গঠনে গণমাধ্যম অপরিহার্য, তাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও অপরিহার্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি দেশের গণমাধ্যম যত শক্তিশালী হবে সে দেশের উন্নয়ন ততটা টেকসই হবে। গণমাধ্যম ও সমাজকে কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই।’

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল বলেন, ‘বর্তমানে সাংবাদিকতা করপোরেট ওনারশিপের আওতায় চলে গেছে। তাই আমাদের দিক থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা আমরা ঠিকভাবে পালন করতে পারছি না। কোথায় আমরা গণমানুষের অধিকার আদায়, নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন বা সামাজিক নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কলম ধরব, তা-না; ৫৭ ধারা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ বিভিন্ন আইনের কারণে আমরা সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি না, কারণ এটি সরকার বিরোধী কোনো পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড নয়। বরং সরকারের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা কিছু আমলারাই আমাদের আওয়াজ বন্ধ করার জন্য সদা তৎপর। আমরা আবারও সাংবাদিকতাকে সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গায় ফিরিয়ে নিতে চাই।’

ডিইউজে’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, ‘আমাদের যারা সংবাদমাধ্যমে কাজ করেন তারা এই সময়ে বেশ সংকটে নিপতিত হয়েছেন। স্বার্থান্বেষী মহলের মদদে সাংবাদিকরা আজ বিভক্ত। এটি স্পষ্ট যে গণমাধ্যম এখন একটি শিল্প, এখানে যার পুঁজি রয়েছে তিনি তার মত করে একটি স্বাধীন সম্পাদকীয় নীতি তৈরি করছেন। তাই গণমানুষের কথা, নির্যাতনের কথা, সামাজিক নৈরাজ্যের কথা বলা এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শত প্রতিকূলতার পরও আমরা আশা রাখি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা তার অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে।’

হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধে তিনি বলেন, ‘ঘটনা যা ঘটে, ঘটনার সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তাই নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করতে হয়। যা ইচ্ছা তাই লিখবার দায়িত্ব কিন্তু সাংবাদিকের নয়। চাইলেই যা ইচ্ছা তাই অপসাংবাদিকতা করা যাবে না।’

সারাবাংলার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক প্রতীক মাহমুদ বলেন, ‘আজকের সাংবাদিকতা অনেকক্ষেত্রে নানারকম লেজুড়বৃত্তিতে দুষ্ট। হয় দলীয় লেজুড়বৃত্তি, করপোরেট লেজুড়বৃত্তি কিংবা রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে গণমাধ্যমের সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গাটি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তাই সাংবাদিকতাকে মূল লক্ষ্যের জায়গায় ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নতুন করে ভাববার সময় এসেছে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুন্ড্র ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. দেওয়ান এম এ সাজ্জাদ, টেলিভিশন দর্শক ফোরামের প্রেসিডেন্ট এ কে এম জাহিদুর রহমান, সাপ্তাহিক শীর্ষ খবরের সিনিয়র রিপোর্টার ড. নাজমুল করিম, বাংলাদেশ ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলম ইবনে হাই, পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর পরিচালক এ আর মিন্টু, পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি. এর নির্বাহী পরিচালক আলী রেজা, শিকড় ঝিনাইগাতীর সভাপতি ও বিসিএস প্রাইম একাডেমির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল আউয়াল, অ্যাডভোকেট সানোয়ারা সুলতানা, মো. আবুল হোসেন, মো. কবির হোসেনসহ অন্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *