সয়াবিনের ডাবল সেঞ্চুরিতে বসে নেই সরিষার তেল

অর্থনীতি স্লাইড

মে ১৪, ২০২২ ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ

অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও মুজতদারদের দৌরাত্মে লিটার প্রতি সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ টাকা বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। তবে ভোক্তা পর্যায়ে এই দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে ভোক্তা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেল ২০০ থেকে ২১০ টাকা লিটার এবং বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা লিটারে।

সয়াবিন তেলের ডাবল সেঞ্চুরিতে বসে নেই সরিষার তেল। গেল দুই মাসে বাগেরহাটে কেজি প্রতি খোলা সরিষার তেলেরও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। লিটার প্রতি বোতল জাত সরিষার তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।

ভোক্তাদের দাবি, সয়াবিনের দাম বেশি দেখে সরিষার তেলের দাম বৃদ্ধি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে হঠাৎ করে সরিষার তেলের দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধি করেছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. সুজাত হোসেন খান।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) বাগেরহাট শহরের প্রধান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, খোলা সরিষার তেল প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মাত্র তিন মাস আগেও বাগেরহাটে সরিষার তেলের কেজি ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। কয়েক ধাপে বৃদ্ধি পেয়ে তা ২৬০ টাকায় পৌঁছেছে।

সেভেন স্টার নামের একটি স্থানীয় সরিষার তেল কোম্পানির বোতলজাত তেল খুচরা বাজারে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। লোকাল মিলগুলোতেও সরিষার তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

অন্যদিকে বাগেরহাটের বিভিন্ন বাজারে সুরেশ সরিষার তেল প্রতি লিটার ৪০০ টাকা, রাধুনী ৩৬০ টাকা, তীর ২৮০ টাকা এবং ২৮০ টাকা। অন্যান্য ব্রান্ডের সরিষার তেলও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে বাগেরহাটের বাজারে। সয়াবিন তেল নিয়ে অস্থিরতার মধ্যে সরিষার তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।

বাগেরহাট বাজারে তেল কিনতে আসা আলমগীর শেখ নামের এক ভ্যানচালক বলেন, হঠাৎ করে দেশে যখন সয়াবিনের তেলের দাম হু হু করে বাড়তে থাকল। তখন সরিষার তেল খাওয়া শুরু করলাম। মাত্র ৮-৯ মাস আগে বাজার থেকে ১৬০ টাকা ১৭০ টাকা কেজি দরে সরিষার তেল কিনেছি। এখন সেই তেল ২৫০-৬০ টাকা হয়ে গেছে। এর সাথে অন্যান্য খাবারেরও দাম বেড়েছে অনেক। আমরা গরীব মানুষরা কোথায় যাব।

দিন মজুর রশীদ মোল্লা বলেন, সয়াবিন ছেড়ে সরিষা খাওয়া শুরু করেছিলাম। এখন তো দেখছি পানি দিয়ে রান্না করতে হবে আমাদের। শুধু আলমগীর ও রশীদ নয়, বাজারে আসা বেশিরভাগ ক্রেতারই বক্তব্য একই রকম।

খুচরা দোকানি মো. লতিফ বলেন, আমরা তেল নিয়ে আসি বগুড়া ও নওগাঁ থেকে। সেখানে দাম বাড়ালে আমাদেরও বাড়াতে হয়। তবে সয়াবিনের থেকে কম বেড়েছে এ জন্য মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিনের মত বাড়লে আর কেউ সরিষার তেল কিনত না।

সেভেন স্টার তেল কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী ফারাজুল ইসলাম বলেন, মোকামে সরিষার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই আমরা তেলের দাম বাড়িয়েছি। এছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না।

বাগেরহাট জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. সুজাত হোসেন খান বলেন, সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সরিষার তেলের চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এই সময়টায় সরিষার দামও কিছুটা বেশি থাকে। এই কারণে ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধি করেছে। তবে অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি অনেক বেশি দামে সরিষার তেল বিক্রি করতে চায় তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *