সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ
বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের ফলাফল ইতিবাচক। দুই দেশের শীর্ষ নেতার ঘন ঘন সফর বিনিময়ের ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ধারাবাহিকভাবে অগ্রগতি হচ্ছে। তারা সম্পর্কের সব বিষয় পর্যালোচনা করেছেন। এখন নিয়মিত ফলোআপ প্রয়োজন। মোদি ও শেখ হাসিনা সম্পর্কের একটা ভিশন তৈরি করেছেন। এটা তারা করেছেন পরস্পরের স্বার্থে।
বীণা সিক্রি বৃহস্পতিবার টেলিফোনে যুগান্তরকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেন। তিনি অবশ্য এ-ও বলেন যে, যদিও তিস্তা চুক্তি হয়নি; কিন্তু কুশিয়ারা চুক্তি হয়েছে। এতে করে একটা ফরম্যাট পাওয়া গেছে যা অপরাপর অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে সহায়ক হবে। তিস্তা চুক্তি না হওয়ার কারণ সবার জানা। চুক্তির খসড়া প্রস্তুত আছে। চুক্তি না হলেও তিস্তায় পানির প্রবাহ কমেনি। বাংলাদেশের পানির প্রাপ্যতা যথেষ্ট আছে। পানি আটকে রাখা হচ্ছে না।
তিস্তা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র অমীমাংসিত ইস্যু হলো তিস্তা চুক্তি। সব বড় বড় অমীমাংসিত ইস্যুর নিষ্পত্তি হয়েছে। তিস্তা চুক্তি ভবিষ্যতে হবে। কারণ ভারত এই চুক্তি করতে চায়। এটা এখন ঝুলে আছে পশ্চিমবঙ্গের সম্মতির জন্য। গঙ্গা চুক্তির সময়ে জ্যোতিবসু সক্রিয় সহযোগিতা করায় চুক্তি সই করা সম্ভব হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের সম্মতি পেলেই তিস্তা চুক্তি হবে।
সাবেক এই ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী সৈন্যদের সন্তানদের শেখ হাসিনা যে বৃত্তি দিয়েছেন; দিল্লিতে তা খুবই প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষ্যে যৌথ বিবৃতিতে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ইস্যুতে অগ্রগতি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতীয় মিডিয়ায় এই সফরের খুবই প্রশংসা করা হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক শক্তিশালী, ইতিবাচক এবং ধীরে ধীরে আরও জোরদার হচ্ছে। এই সম্পর্কে পারস্পরিক স্বার্থ এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধিকে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। সেপা চুক্তি একটি লাভজনক চুক্তি। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলে সাফটার আওতায় বাংলাদেশ যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। তখন সেপা চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ লাভবান হবে।
তিনি বলেন, রূপসা সেতু বাংলাদেশের গোটা দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সম্ভাবনা উন্মোচন করবে। মোংলা বন্দর কার্যকর হয়ে যাবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে যাবে। রোহিঙ্গা সংকট সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে বীণা সিক্রি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ২০১৮ সালে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এই সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। ভারত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরে যাওয়াকে সমর্থন করে।