শরীরে ট্যাটু রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়

স্বাস্থ্য

মে ২৪, ২০২২ ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ

হালফ্যাশনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শরীরে ট্যাটু বা উল্কা তৈরি করা। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, অসচেতনতা আর অসাবধানতার কারণে ত্বকে উল্কা বা ট্যাটু তৈরি করায় হেপাটাইটিস-বি, এইচআইভিসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। পাশাপাশি বাড়তে পারে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও।

উল্কা বা ট্যাটু হচ্ছে একধরনের শিল্প। শরীরের যেকোনো স্থানে এ শিল্পকর্ম তৈরি করা যায়। এটি তৈরি করতে প্রথমে শরীরে ইনজেকশন পুশ করার মাধ্যমে স্থানটি অবশ করা হয়। এরপর ট্যাটুশিল্পী মেশিনে নিডল বা সুঁই লাগিয়ে পছন্দের নকশা শরীরে আঁকতে শুরু করেন।

এ পদ্ধতিতে ট্যাটু মেশিনের সুঁইয়ের আঘাতেই রং ত্বকের গভীরে বসে গিয়ে ছবি বা নকশা তৈরি করা হয়। অমোচনীয় কালি বা রং ব্যবহার করায় ট্যাটু বা উল্কা শরীরে দীর্ঘসময়ের জন্য স্থায়ী হয়।

যেহেতু ট্যাটু বা উল্কা তৈরিতে ত্বকের গভীরে রং ও সুঁই প্রবেশ করছে, তাই বিভিন্ন উপায়েই শরীরে সংক্রমিত হতে পারে নানা রোগ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইচআইভি, হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে শতভাগ। এ ছাড়া বিভিন্ন চর্মরোগের মধ্যে রয়েছে ট্যাটু গ্র্যানুলোমা, ট্যাটু টিউবারকুলোসিস, ট্যাটু সারকয়ডোসিস, ট্যাটু আলসার, কিংবা ডিপ ফাঙাল ইনফেকশনের মতো রোগগুলো।

এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছেন, পুরোনো নিডল বা সুঁই ব্যবহার করা, প্রয়োজনীয় উপকরণ সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত না করা এবং নিম্নমানের রং ব্যবহার করার প্রবণতা।

রোগের বিস্তার এড়াতে চিকিৎকরা মনে করেন, শরীরে অস্থায়ী ট্যাটু স্টিকার ব্যবহার করাটাই বেশি শ্রেয়। তবে যদি দীর্ঘস্থায়ী ট্যাটু তৈরি করতে একান্তই ইচ্ছা কারো থেকে থাকে, তবে রোগ সংক্রমণের হাত থেকে দূরে থাকতে মেনে চলতে হবে কিছু বিষয়।

প্রথমেই ট্যাটু তৈরির স্থানটি অবশ করতে ব্যবহৃত সুঁইটি নিরাপদ কি না, তা নিশ্চিত করুন। এরপর ট্যাটু তৈরির সব প্রয়োজনীয় উপকরণ জীবাণুমুক্ত কি না, তা চেক করে নিন। ট্যাটুশিল্পীর হাত জীবাণুমুক্ত থাকাটাও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রয়োজনে তাকে গ্লাভস ব্যবহার করতে বলতে পারেন।

ট্যাটু তৈরির জন্য এমন স্থান পছন্দ করবেন না, যেখানে রক্তনালি, শিরা বা উপশিরা রয়েছে। শরীরের ক্ষতস্থানে ট্যাটু তৈরি করা থেকে বিরত থাকুন। ট্যাটু তৈরিতে যে কালি বা রং ব্যবহার করা হচ্ছে, তার মানও এ ক্ষেত্রে যাচাই করুন। সবশেষে ট্যাটু তৈরি হয়ে গেলে ট্যাটুর স্থানটিতে বিশেষ ধরনের ক্রিম বা ওষুধ ম্যাসাজ করা হয়। এ ধরনের প্রোডাক্ট কতটা মানসম্পন্ন–রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে তা-ও যাচাই করে নিতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *