রোহিঙ্গাদের সহায়তা চালু রাখার আহ্বান

রোহিঙ্গাদের সহায়তা চালু রাখার আহ্বান

জাতীয় স্লাইড

নভেম্বর ১৮, ২০২২ ৮:৪২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি’ নিয়ে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের মানবিক প্রচেষ্টাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যৌথভাবে সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। ১০৯টি দেশ এ প্রস্তাবে সহ-পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, যা ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ।

বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আইসিসি, আইআইএমএম ও অন্যান্য দায়বদ্ধতা নিরূপণকারী ব্যবস্থার সঙ্গে যেভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে তা প্রশংসিত হয়েছে। জাতিসংঘের এই প্রস্তাবটি রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি বিভিন্ন অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি প্রকাশের একটি অনন্য উদাহরণ।

‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে এবারের প্রস্তাবে (রেজুলেশন)।

এতে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করার পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ বিষয়ে মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সবগুলো মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

এছাড়া মিয়ানমারের রাজনৈতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে আঞ্চলিক দেশ ও সংস্থাগুলো-যেমন আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে সর্বসম্মতিক্রমে আসিয়ান গৃহীত পাঁচ দফা সুপারিশের দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরত্ব দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবে।

এছাড়া চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরূপণ প্রক্রিয়ার ওপর সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউশনের তদন্তকেও স্বাগত জানানো হয়েছে।

সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার সময় বাংলাদেশের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মো. মনোয়ার বলেন, প্রত্যাবর্তনের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশে ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংহতি পাওয়ার দাবি রাখে। এই মানবিক সাড়াদান প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়ন প্রয়োজন। তিনি রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য নেতৃত্ব দেওয়ায় ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মনোয়ার বলেন, আমরা মানবিক বিবেচনায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম, বাস্তুচ্যুত এ জনগোষ্ঠীর সব সময়ই মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়-উভয় ফ্রন্টে বহুমুখী কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে, যাতে মিয়ানমারে নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবর্তন উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *