রাশিয়ার সরকারি বিমানসংস্থার ওপর ব্রিটিশ নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক

মে ২০, ২০২২ ৯:১২ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়ার সরকারি বিমানসংস্থাগুলোর ওপর এবার নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের জেরে এই নিষেধাজ্ঞা বলে জানায় ব্রিটিশ প্রশাসন। এদিকে পশ্চিমাদেশগুলোর অব্যাহত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই গ্যাস পাইপলাইন নর্ডস্ট্রিম-টু প্রকল্প ছাড়া ইউরোপ চলতে পারবে না বলে সতর্ক করে দিল ক্রেমলিন। খবর ইন্ডিয়া টুডে।

একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে পরাস্ত করতে ব্যস্ত পশ্চিমা দেশগুলো। এরই অংশ হিসেবে এবার রাশিয়ার এয়ারলাইন্সগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ব্রিটেন।

দেশটির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় বিমানসংস্থা এরোফ্লট, উরাল এয়ারলাইন্স ও রসিয়া এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক বিমান ব্রিটেনের বিমানবন্দরে অবতরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাজ্য।

এতে বিপুল লোকসান গুনতে হবে রাশিয়াকে। কারণ প্রতি বার বিমান অবতরণের ফলে মস্কোর অন্তত ছয় কোটি মার্কিন ডলার লাভ হতো। নিষেধাজ্ঞার পরে তা হারাতে হবে বলে এক বিবৃতিতে জানায় ব্রিটিশ সরকার।

রাশিয়ান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বা সেখানে নিবন্ধিত কোনো সংস্থার মালিকানাধীন, ইজারা দেওয়া বা পরিচালিত বিমানের ফ্লাইটের জন্য রাশিয়ার আকাশসীমা ব্যবহারের ওপর বিধিনিষেধ চালু করা হয়েছে।

রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাজ্যের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অবন্ধুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) যুক্তরাজ্য রাশিয়ার জাতীয় বিমান সংস্থা এরোফ্লটকে ব্রিটেনে অবতরণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান যতদিন চলবে, ততদিন এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেও জানায় ব্রিটেন। এর আগে, রাশিয়ার সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রশাসন।

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা সচিব বেন ওয়ালেস গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমি মনে করি, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের প্রতিক্রিয়া হিসেবে গতকাল এরোফ্লটকে যুক্তরাজ্যে অবতরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছ।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞার পাল্টা জবাব আসছে মস্কোর পক্ষ থেকেও। গ্যাস পাইপলাইন নর্ডস্ট্রিম-টু নিয়ে এবার সতর্কবাণী দিলো পুতিন প্রশাসন। ইউরোপের দেশগুলো নর্ডস্ট্রিম-টু গ্যাস পাইপলাইন এর ওপর নির্ভরশীল । এমনকি ভবিষ্যতে ইউরোপ রাশিয়ার গ্যাস ছাড়া চলতে পারবে না বলে সতর্ক করেছে ক্রেমলিন। আপাতত প্রকল্পটির নির্মাণকাজ স্থগিত থাকলেও শিগগিরই তা শুরু হবে বলেও জানিয়েছে মস্কো।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে অনেক পশ্চিমা দেশ ইতিমধ্যে রাশিয়ার ব্যাংক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যুক্তরাজ্য নিজেদের আর্থিক ব্যবস্থা থেকে রুশ ব্যাংকগুলোকে নিষিদ্ধ করেছে, অনেক সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে। এ ছাড়া ম্যাকডোনাল্ডস, কোকাকোলা, স্টারবাকসসহ হাজারখানেক আন্তর্জাতিক কোম্পানি রাশিয়া থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায় রাশিয়া। এরপর পশ্চিমা দেশগুলো একে একে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে থাকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর নতুন করে চাপ বৃদ্ধি করতেই এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা বিশ্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *