মেঘের কাব্য বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত

দেশজুড়ে

ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩ ৮:১৫ অপরাহ্ণ

মতিউর রহমান সরকার দুখু,ঢাবি প্রতিনিধি

আজ ৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকাল ৫ টায় অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ এ ‘মেঘের কাব্য’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বইটির সম্পাদিকা ও কবি সুনন্দা শিরিন। বইটি শিখা প্রকাশনী থেকে আজ প্রথম প্রকাশিত হয়।

বিকেলে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কানাডা প্রবাসী লেখক রশীদ খান, লেখক শামসুল আরেফিন ফেরদৌস নিপুণসহ আরও কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী যোগ দেন। মোড়ক উন্মোচনের মঞ্চটি বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত। বিকেল ৫ টায় সম্পাদক,লেখক ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ মোড়ক উন্মোচনের মঞ্চে উপস্থিত হন। এরপর ঘোষণা মঞ্চ থেকে মেঘের কাব্য বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের ঘোষণা করার পর বই ও লাল ফিতা হাতে সবাই মঞ্চে উঠেন। শুরুতে লাল ফিতা কেটে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেঘের কাব্য বইয়ের সংকলন ও সম্পাদনায় থাকা সুনন্দা শিরিন। তিনি বলেন, “মেঘের কাব্য বলতে গেলে আগেই বলতে হয় ঘাসফুলের কথা। ঘাসফুল হচ্ছে আমার একটা সাহিত্য যেখান থেকে মেঘের কাব্যের উদয়। প্রত্যেকটা কবির মনের যে আনন্দ উচ্ছ্বাস সেটাই এখানে ( মেঘের কাব্যে) উদিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই বইটা লেখার পেছনে মূল অনুপ্রেরণা আমার সাহিত্যের রূপ ঘাসফুল। ঘাসফুলের ছোট্ট উঠোন ঘর কিন্তু এর মধ্যে অনেকগুলো ফুল। আর সে ফুলের ছাতা হচ্ছি আমি। প্রত্যেকটা পাপড়ি হয়ে ছাতা। অনেক অনেক বৃষ্টি ঝরে,কবিরা কবিতা লিখে। তাদের কবিতা ছাতার মতো ধরে রাখার জন্যই আমি ঘাসফুল। মেঘের কাব্য বইয়ে আছে অনেকেরই কবিতা যারা নিজেদের লুকায়িত করে রাখত। যারা নিজেদের আড়াল করে রাখত। আমার মনে হয়েছে কেন তারা লুকিয়ে থাকবে,আমি একটু তাদের বের করে আনার চেষ্টা করলাম। আমি তাদের একটু উৎসাহিত করলাম যে দুইটা লাইন লেখা যাবে তখন দেখলাম সে লিখে দিল। তাই চাইলাম সে( লোকায়িত লেখকরা) ওভাবে থাকবে কেন। লাইনে লাইনে সে বেরিয়ে আসুক, মলাটবন্দি হোক,বই আকারে আনি। তারপর সে বুঝতে পারুক সে পারে,তার মনে সে সাহস আছে। আমি সেই চেষ্টাটাই করেছি।” পাঠকদের উদ্দেশ্যে সম্পাদিকা বলেন, পাঠক এটা ছুবে,ধরবে,খুলবে তাহলে বুঝবে যে এটার মধ্যে কি আছে। প্রত্যেকটা কবিতা না পড়লে আসলে মেঘের কাব্য বুঝতে পারবেনা।” এই বইটি পড়ার মাধ্যমে পাঠকরা মেঘের রাজ্যে ভিজবে বলেও সুনন্দা শিরিন মন্তব্য করেন।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অভিমত প্রকাশ করে কানাডা প্রবাসী লেখক রশীদ খান সবাইকে সালাম জানিয়ে বলেন, আমি সত্যি আনন্দিত। আমি কানাডার মন্ট্রিল থেকে এসেছি। সুনন্দা শিরিনের ঘাসফুলের মেঘের কাব্য এতো সুন্দর একটা কবিতার বইয়ের আজকে মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। আমার ক্ষুদ্র হাতে লেখা কিছু কবিতা বইটিতে স্থান করে দেয়ায় আমি সুনন্দা শিরিনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এছাড়া তিনি(লেখক রশীদ খান) মেঘের কাব্য বইটিতে যারা কবিতা লিখেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানান এবং আগামীতে আরো সুন্দর করে একটি বই বের করার আশা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শেষে মেঘের কাব্যে প্রকাশিত কবিতার লেখক শামসুল আরেফিন ফেরদৌস নিপুণ বলেন, মেঘের কাব্য বইটিতে আমার ৩ টি কবিতা আছে। প্রথমে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই যিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট ছোট কবিদের এনে এই বইয়ে সংযুক্ত করেছে এবং তাদেরকে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিয়েছে। প্রত্যেকের মনের যে কথাগুলো সেগুলো কবিতা আঁকারে এই বইটিতে স্থান পেয়েছে। আশা করি পাঠকবৃন্দ এটা পছন্দ করবে, ভালোবাসবে। কারণ অনেকের মনের কথা একেকজন একেকভাবে একেক ভাষায় প্রস্ফুটিত করেছে এই বইটিতে। বইটি এতে সুন্দর একটি প্রচ্ছদ হয়েছে যা বাসায় রাখার মতো ও পড়ার মতো।” তিনি সবাইকে শুভকামনা জানিয়ে এবং বইটি সংগ্ৰহে রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন।

মেঘের কাব্য বইয়ের সম্পাদিকা ও কবি সুনন্দা শিরিন ঢাকা সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনে জন্মগ্ৰহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস বরিশাল। তিনি ব্রজমোহন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স করেন। সুনন্দা শিরিনের পিতার নাম মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মনসুর আলীও মাতার নাম: সুলতানা রাজিয়া। স্বামী প্রফেসর ড. হারুন
অর রশিদ।

ছোটোবেলা থেকেই লেখালেখির পাশাপাশি
আবৃত্তি, অভিনয়, বিতর্ক, নাচ, সঞ্চালনাসহ
সকল বিষয়ে ছিলো তার জোরালো অবস্থান ।
ক্লাস সেভেন থেকেই তার লিখা কবিতা প্রথম
আলো, দৈনিক দক্ষিণাঞ্চলসহ বিভিন্ন
বায়বন্য পত্রিকায় প্রকাশ হতে থাকে। তিনি
মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এর হাত থেকে ‘বাংলাদেশ নারী ক্ষমতায়ন পুরস্কার ২০২২ কবি ক্যাটাগরির এ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন।
তার বেশ কিছু যৌথ কাব্যগ্ৰন্থ ও ছোটো গল্প
রয়েছে। তার সম্পাদনায় প্রকাশিত সংকলিত
বই ‘কবিতা কণ্ঠ’, ‘যাসফলে শিশির বিন্দু’ ।
তার প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ ‘কাব্যের কবিতা’ ও ‘মন ঘুঙুর’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *