মেঘনার বুকে চর, নৌ চলাচল ও সেচ কার্যক্রম বন্ধ,প্রায় ৫ হাজার একরের অধিক জমিতে ফসল উৎপাদনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা

দেশজুড়ে

নভেম্বর ২৫, ২০২২ ১২:২৬ অপরাহ্ণ

মোঃ আব্দুল হান্নান,নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ

দীর্ঘদিন ড্রেজিংয়ের অভাবে আর স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাঁশ কাটা ফেলে রাখার কারনে মাঠি সরতে না পারায়,মেঘনার শাখা নদী ভরাট হয়ে গজিয়েছে চর।তাতে নৌ চলাচল আর সেচ কার্যক্রম হয়েছে পড়েছে বন্ধ।পানি সেচের অভাবে প্রায় ৫ হাজার একরের ও অধিক বোরো জমি পরিণত হতে পারে মরু ভুমিতে। ব্যাহত হতে পারে কয়েক হাজার টন বোরো ধান উৎপাদন।ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভাটির রানী নামে খ্যাত গোয়াল নগর ইউনিয়নের গোয়ালনগর পার্শ্ববরাতী পাচ গ্রামের।গতকাল সরেজমিন গোয়াল নগরে গিয়ে দেখা গেছে এমনই চিত্র।গোয়ালনগর গ্রামের উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগ উপজেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার দুই সীমানার মাঝে অবস্থিত ধলেশ্বরী ও মেঘনার সাথে সংযোগ স্থাপনকারী প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা নদীটি ভরাট হয়ে নদীতে গজিয়েছে চর।তাতে বন্ধ হয়ে গেছে নৌ চলাচল।আর পানির অভাবে বোরো জনি রোপনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।জানাগেছ,গোয়ালনগর,রামপুর নোয়াগাও,মাছমা ও সীমেন কান্দি পাঁচ গ্রামে প্রায় ৭ হাজার ভোটার আর ১২ হাজার লোকের বসবাস।স্থানীয় কৃষকরা জানায় এখানে আবাদি কৃষি জমির পরিমান প্রায় ৫ হাজার একরের উপরে।হাওড় গুলোতে বোরো ধান উৎপাদনের জন্য কৃষকদের প্রায় ১০টি সেচ পাম্প রয়েছে। কথা হয় সেচ পাম্পের মালিক মোঃ আবু সাইদ, মোঃ আবু তাহের,মোঃ ফরিদ মিয়া,মোঃ আব্দুল্লাহ,মোঃ আরজ মিয়া,মোঃসুরুজ মিয়া,মোঃ সবুজ মিয়া,পীমাংসু দাস,শুকমন দাস,রবি মেম্ভার,উপানন্দ দাস,মোঃ শাহ আলম,মোঃ সত্তর মিয়ার মিয়ার সাথে।ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে,রামপুর গ্রামের মোঃ আবু তাহেরের সাথে।তিনি নিজস্ব অর্থায়নে নিজেদের লোক আর দুটি ড্রেজার দিয়ে নদীটি খননের চেষ্টা করে যাচ্ছে।একদিকে ড্রেজারে মাঠি কাটছে আর অন্য দিকে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।কেন তিনি নিজ উদ্যোগে নদীটি খননের চেষ্টা করে যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,নদীতে নৌকা চালিয়ে আমি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি।নদীতে চর গজানোর কারনে নৌকা চলাচল বন্ধ।এখন না খেয়ে মারতে হবে,তাই নিজেরাই খননের চেষ্টা করে যাচ্ছি।তিনি দ্রুত নদীটি খননের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।কথা হয় পার্শ্ববর্তী অষ্টগ্রাম জেলার একুরদিয়া গ্রামের কৃষক কৃষ্ণ মোহন ও রঞ্জিত দাসের সাথে।তারাও জানান দ্রুত নদীটি খনন না করা হলে দুই উপজেলার হাজার হাজার একর জমির ধান তোলা ও পানি সেচ সম্ভব হবেনা।কথা হয় গোয়ালনগর গ্রামের সেচ পাম্পের মালিক আবু সাইদ ও রমজান মিয়ার সাথে।তারাও জানায় নদীটি দ্রুত খনন করা না হলে পানি সংকটের কারণে সেচ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে আর তাতে হাজার হাজার একর বোরো জমির ফসল উৎপাদন ব্যবহত হবে।

কি কারনে নদীর বুকে চরের সৃষ্টি হয়েছে জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানায়,দীর্ঘদিন খনন না করা আর খড়স্রোতা নদীতে প্রভাবশালীরা বাঁশ ও কাটা ফেলে মাছ ধরতে গিয়ে বাধা সৃষ্টি করায় মাঠি আটকে এমন পরিস্থিতি হয়েছে।
গোয়াল নগর,রামপুর,নোয়াগাও,সীমের কান্দি ও মাছমার স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত নদীটি খননের ব্যবস্থা করে দিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য,মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *