ভারতে নতুন আতঙ্ক ‘টমেটো ফ্লু’

স্বাস্থ্য

মে ১৪, ২০২২ ৯:২১ পূর্বাহ্ণ

কোভিড উদ্বেগ পুরোপুরি কাটার আগেই এবার রহস্যময় ‘টম্যাটো ফ্লু’-র হানা ভারতে। কেরলের কোল্লাম জেলায় ইতোমধ্যেই ৮০ শিশু এ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে সে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো। আক্রান্ত শিশুদের প্রত্যেকেরই বয়স ৫ বছরের কম বলে জানিয়েছে কেরালার স্বাস্থ্য দফতর। কোল্লাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলাতেও কিছু রোগীর সন্ধান মিলেছে। কেরালা-তামিলনাড়ু সীমান্তে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। জ্বরের উপসর্গের দেখা মিললেই করা হচ্ছে পরীক্ষা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘টমেটো ফ্লু’ একধরনের জ্বর। তবে এটি কোনো ভাইরাসজনিত জ্বর নাকি চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগ-তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ‘টমেটো ফ্লু’তে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে পাঁচ বছরেরও কমবয়সী শিশুরা। সেই সংখ্যাটি কেরালায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০।

ইতোমধ্যে গোটা রাজ্য সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। দু’জন মেডিক্যাল অফিসারকে তামিলনাড়ু-কেরল সীমান্ত যাতায়াতকারীদের শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশুদের শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষায় ২৪ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে নিয়ে একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।

কী এই রোগ? উপসর্গই বা কী? চলুন তা জেনে নেওয়া যাক।

টমেটো ফ্লুর সন্ধান 

কেরালায় টমেটো ফ্লু শনাক্ত হওয়ার পর তামিলনাড়ু সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কোল্লাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলাতেও কিছু রোগীর সন্ধান মিলেছে। জ্বরের খবর মিলেই পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আক্রান্তদের শরীরে ছোট ছোট লাল ফোসকার সঙ্গে জ্বর আসছে। এ কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছে টমেটো ফ্লু।

কারা আক্রান্ত

এতদিন মানুষের বার্ড ফ্লু বা সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন হলো টমেটো ফ্লু। এ নতুন ধরনের জ্বরে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

কী কী উপসর্গ

শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাল লাল ফুসকুড়ি দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে প্রচণ্ড জ্বর। পেট ব্যথা, গা বমি বমি, ডায়রিয়া, জয়েন্টে ব্যথা, হাঁচি-কাশি রয়েছে উপসর্গের মধ্যে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাত-পায়ের রঙের পরগবর্তন হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নতুন হওয়ার কারণে এ রোগের এখন পর্যন্ত কোনো আলাদা চিকিৎসা নেই। তাই আক্রান্তদের সঠিকভাবে দেখাশোনা অত্যন্ত প্রয়োজন। জ্বরের কারণে শরীরে পানির পরিমাণ বেশ কিছুটা কমে যাচ্ছে। এ কারণে পরিমাণ মতো পানি পানের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ফোসকাগুলো যাতে কোনোভাবে ফেটে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। বলা হচ্ছে, রোগটি সংক্রমক হওয়ার কারণে আক্রান্তকে আলাদাভাবে রাখতে হবে। না হলে এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। সংক্রামিত শিশুর ব্যবহৃত বাসনপত্র, জামাকাপড় এবং অন্যান্য জিনিসপত্র অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

তাই উপসর্গগুলো দেখা দিলেই তাৎক্ষণিক চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। পানিভরা ওই ফোসকা যাতে ফেটে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সবার সংস্পর্শ থেকে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব একলা ঘরে পাঠাতে হবে। তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র যাতে অন্য কেউ ব্যবহার না করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *