বড় লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ইউক্রেন-রাশিয়া

আন্তর্জাতিক স্লাইড

এপ্রিল ১২, ২০২২ ১০:১১ পূর্বাহ্ণ

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বড় আকারের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে রাশিয়া। মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেনও। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের এই লড়াই হবে ট্যাংক ও কামানের। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, এই লড়াই ‘আমাদের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দেবে’।

রাজধানী কিয়েভ থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সেনা ও সামরিক শক্তির সমাবেশ বাড়াতে শুরু করে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পূর্বাঞ্চলে পরবর্তী অভিযানের জন্য হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে মস্কো। রাশিয়ার প্রধান সামরিক লক্ষ্য এখন ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চল দখল করা।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, এবারের লড়াই প্রথম ধাপের মতো হবে না। ট্যাংক, কামান ও যুদ্ধবিমানের ব্যবহারও থাকবে এবার। আর এই ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে রাশিয়া।

ইতোমধ্যে কিয়েভ থেকে প্রত্যাহার হওয়া রুশ ট্যাংক ও কামান ইউনিট এবং সেনারা জড়ো হতে শুরু করছে। রুশ সামরিক টেলিভিশনের ফুটেজে এমন দৃশ্য প্রচার হয়েছে। আক্রমণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলেও টেলিভিশনটি জানিয়েছে। ইউক্রেনও রুশ সেনা প্রত্যাহারের পর উত্তরাঞ্চল থেকে তাদের সেনাদের দোনবাসের দিকে পাঠাতে শুরু করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দোনবাসের সংযোগ রেখা এবং আশেপাশের এলাকায় প্রতিদিন বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হচ্ছে। রুশ সেনারা ইজিউমের দক্ষিণ থেকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করছে।

পশ্চিমা ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, বড় ধরনের আক্রমণ কখন শুরু হবে তা নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর। তাদের মতে, রাশিয়া হয়তো মোতায়েন সেনা দিয়েই হামলা শুরু করতে পারে। অথবা উত্তর ইউক্রেনে ‘ব্যর্থ’ সেনাদের পুনর্গঠিত করতে কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা লাগতে পারে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা আরও বলছেন, দোনবাস দখল করেই ক্ষান্ত হবে না মস্কো। পুতিন চান, দোনবাসের লড়াইয়ে ইউক্রেনের সেরা ইউনিটগুলো ধ্বংস করতে। এরপর তারা কিয়েভসহ পুরো দেশ দখলের চেষ্টা করবে। সংঘাতের নতুন ধাপের আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জরুরি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেন দখলের আশা ছাড়েনি মস্কো। তার কথায়, ‘রাশিয়া এখনও ভ্রমের মধ্যে বাস করতে পারে, নতুন অস্ত্র ও সেনা আমাদের মাটিতে জড়ো করতে পারে। যার অর্থ হলো আমাদের আরও নিষেধাজ্ঞা এবং আমাদের দেশের জন্য আরও অস্ত্র প্রয়োজন।’

ইউক্রেনে সেনা মোতায়েন ব্যহত করতে ইউক্রেনীয় রেলস্টেশনে বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৫৭ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে ওই হামলার কথা অস্বীকার করেছে মস্কো।

রোববার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ দাবি করেছেন, সমুদ্র থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে দিনিপ্রো শহরের একটি হ্যাঙ্গারে থাকা ইউক্রেনের চারটি এস-৩০০ লঞ্চার ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক কর্তৃপক্ষ বেসামরিকদের দ্রুত অঞ্চলটি ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। স্থানীয়দের সরিয়ে নিতে বিশেষ ট্রেন ও বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দোনবাসের পশ্চিমে দিনিপ্রোপাত্রোভস্ক অঞ্চলে রোববার (১০ এপ্রিল) বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে একটি এয়ারপোর্ট টারমিনাল ও দিনিপ্রো শহরের আরেকটি অবকাঠামো এবং পাভলোহরাদ শহরে শিল্প স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। এমন দাবি করেছে আঞ্চলিক প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *