ব্লেডের মতো ধারালো গোলাপ

ব্লেডের মতো ধারালো গোলাপ

ফিচার স্লাইড

ডিসেম্বর ৫, ২০২২ ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন সামনে রেখে পুরো ‘কাতার’ যে নির্মাণযজ্ঞ ও রূপান্তর প্রক্রিয়া চালিয়েছে তারই এক নিদর্শন মরুভূমির গোলাপ। প্রকৃতিকভাবে একটি গোলাপ যেভাবে মরুভূমিতে পাঁপড়ি মেলে দেয় ঠিক সেইভাবে গড়ে তোলা হয়েছে কাতারের ন্যাশনাল মিউজিয়াম। আর এটিকে বলা হচ্ছে মরুভূমির গোলাপ। এটি মূলত কাতারের জাতীয় জাদুঘর। এখানে রয়েছে অষ্টাদশ শতকের প্রাচীন কোরআন।

ফরাসি তারকা স্থপতি জ্যঁ নুভেল এটি ডিজাইন করেছেন

ফরাসি তারকা স্থপতি জ্যঁ নুভেল এটি ডিজাইন করেছেন

ফরাসি তারকা স্থপতি জ্যঁ নুভেল এটি ডিজাইন করেছেন। ভবনটি কাতারকে সাংস্কৃতিক শক্তির পরিচয় বহন করছে। কাতারের রাজধানী দোহার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাগরঘেঁষা পথ ধরে শহরের কেন্দ্রের দিকে যেতে যেতে চোখে পড়ে এই মুগ্ধকর ভবন। এটি তেপ্পান্নহাজার হাজার বর্গফুট জুড়ে বিস্তৃত।

এই জাদুঘরের নকশাশৈলী এবং কাঠামো মরুভূমির রহস্যের প্রতীক। মরুভূমির গোলাপে ব্লেডের মতো পাপড়ি থাকে, এটিও ঠিক তাই।

 এই রহস্যময় স্থাপনাটির স্থপতি বলেছেন, আমি শতাব্দী বা শতাব্দীর স্কেলে কাজ করি, জনগণের জন্য, নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য নয়। মরুভূমির গোলাপ ভবনটি সেই দেশের ভৌত, মানবিক এবং অর্থনৈতিক ভূগোলের প্রতিচ্ছবি। স্থপতি হিসেবে তিনি কাতারের প্রতীকী উপাদানের এক সমন্বির রূপক তৈরি করেছেন।

মরুভূমির গোলাপ ভবনটি সেই দেশের ভৌত কাঠামোর নিদর্শন।

মরুভূমির গোলাপ ভবনটি সেই দেশের ভৌত কাঠামোর নিদর্শন।

জাদুঘরের মূল প্রবেশপথে ২ হাজার ৯৫০ ফুট (৯০০ মিটার) লম্বা হ্রদের ওপর রয়েছে ১১৪টি ঝরনার ভাস্কর্য। ভেতরে ৪ হাজার ৯২০ ফুটেরও (১৫০০ মিটার) বেশি গ্যালারির জায়গা আছে। আরো আছে  ১৫ লাখ মুক্তা দিয়ে অলঙ্কৃত করা ঊনিশ শতকের গালিচা, রাজমুকুটসহ অনেক দুর্লভ জিনিস। বাইরে থেকে এটি দেখতে অনেকটা শুন্যে রাখা একগুচ্ছ পিরিচের মতো। তিন হাজার ৬০০ রকম আদল ও আকৃতির ৭৬ হাজার প্যানেল দিয়ে সাজানো হয়েছে চোখধাঁধানো এই স্থাপত্যের বহু বক্ররেখার ছাদ।

৫ লাখ ৬০ হাজার বর্গফুট জায়গার ওপর এটি নির্মাণে লেগেছে প্রায় এক দশক। এর পেছনে ব্যয় হয়েছে ৪৩ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার (৩ হাজার ৬৬৫ কোটি ৫৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা)।

মরুভূমির গোলাপ ভবন

মরুভূমির গোলাপ ভবন

ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতার এমন একটি দেশ, যার আয়তন জার্মানির হেসে রাজ্যের মাত্র অর্ধেক এবং হামবুর্গের তুলনায় কম বাসিন্দা রয়েছে সে দেশটিকে জ্ঞানের কেন্দ্রে প্রবেশের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন বিনিয়োগ করছে।

আধুনিক কাতারের প্রতিষ্ঠাতার ছেলে শেখ আমনা বিন আব্দুল আজিজ বিন জসিম আল-থানির প্রাসাদ ছিল এই জায়গায়। সেখানেই গড়ে তোলা হয়েছে কাতারের ফ্যাকাশে রঙের এই ভবন। যা কাতারের জনগনের বেদুঈন অতীত ও সমৃদ্ধ বর্তমানের প্রতীক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *