বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিল আইএমএফ

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিল আইএমএফ

আন্তর্জাতিক স্লাইড

ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

নতুন করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। সংস্থাটি বলেছে, ২০২৩ সালের প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৯ শতাংশ। আগে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, সেখানে বলা হয়েছিল নতুন বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে ভোগপণ্যের চাহিদা বাড়ায় এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ চীন করোনার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করায় প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ২০২২ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। নতুন পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধি বাড়ার কথা বলা হলেও গত বছরের তুলনায় এটি এখনো কম।

আইএমএফ বলছে, ২০২৪ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। অক্টোবরে দেওয়া পূর্বাভাসের তুলনায় এটি ১০ শতাংশ কম।

আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়ে-অলিভার গোরিনচাস বলেছেন, ‘মন্দার শঙ্কা কেটে গেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ইতিবাচক অবস্থানে আছে।’ তবে তিনি জানিয়েছেন, মূল্য নিয়ন্ত্রণে আরও কাজ করতে হবে। কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চীনের করোনা বিধিনিষেধের কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে আরো বিঘ্ন ঘটতে পারে।

আইএমএফ তাদের জিডিপির পূর্বাভাসে জানিয়েছে, বিশ্বের বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। অক্টোবরের পূর্বাভাসে এটি ১ শতাংশ বলা হয়েছিল। মূলত ২০২২ সালের শেষ দিকে চাহিদা এবং বিনিয়োগ বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন জিডিপির প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।

অপরদিকে ইউরোপে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ০ দশমিক ৭ শতাংশ। অক্টোবরের পূর্বাভাসে যা ০ দশমিক ৫ শতাংশ বলা হয়েছিল। আইএমএফ বলেছে, ধারণারও কম সময়ের মধ্যে জ্বালানির উচ্চমূল্যের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। জ্বালানির মূল্য কমার বিষয়টি এ অঞ্চলের জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর সম্ভাবনাকে সহায়তা করেছে।

বড় অর্থনৈতিক দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিক মন্দায় পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। যুক্তরাজ্যের জিডিপির প্রবৃদ্ধি এ বছর ০ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পাবে। দেশটির মানুষ জীবনমানের ব্যয় ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছে।

চীনে গত বছরের শেষ দিকে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। বিধিনিষেধ শিথিলের আগে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। কিন্তু নতুন পূর্বাভাসে বলা হয়েছে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। মূলত বিধিনিষেধ শিথিলের কারণে অর্থনেতিক কার্যক্রম বাড়ায় দেশটির প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে ২০২৪ সালে এটি কমে যাবে। ২০২২ সালে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ০ শতাংশ। গত ৪০ বছরের মধ্যে যা বৈশ্বিক গড় প্রবৃদ্ধির তুলনায় কম ছিল।

একই সময় ভারতের প্রবৃদ্ধি শক্ত অবস্থানে রয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ।

গত বছর আইএমএফ অর্থনীতির যে পূর্বাভাস দিয়েছিল সেখানে তিনবার প্রবৃদ্ধির হার কমানো হয়েছিল। কিন্তু এক বছরের মধ্যে এবারই প্রথমবার প্রবৃদ্ধি বাড়ার কথা বলা হচ্ছে। যা বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ভালো সংবাদ বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ পিয়া অলিভার গোরিনচাস।

সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *