পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘের সৃষ্টি করে। এই ফোঁটাগুলি যথেষ্ট পরিমাণে ভারী হলে তা পৃথিবীর বুকে ঝরে পড়ে। একেই বলে বৃষ্টি। বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টি সুপেয় পানির বড় উৎস। বিচিত্র জৈব ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখতে, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো ও কৃষি সেচব্যবস্থা সচল রাখতে বৃষ্টির প্রয়োজন হয়। অথচ অতি প্রয়োজনীয় এই বৃষ্টি পৃথিবীর একটি গ্রামে কখনোই হয় না।
পৃথিবীর বৈচিত্র্যতার শেষ নেই। কোথাও রুক্ষ কঠিন। কোথাও বা সবুজের সমারোহ। কোথাও ধূসর মরু প্রান্তর। আবার অন্য কোথাও সমুদ্র জলরাশি বা হিমবাহেপূর্ণ। পৃথিবীর এই বৈচিত্র্যতার আরেক নিদর্শন পশ্চিম-মধ্য এশিয়ার ইয়েমেনের একটি গ্রাম। যেখানে মেঘ জমলেও বৃষ্টি হয় না। রুক্ষ কঠিন পাহাড়ের বুকে গড়ে ওঠা এই গ্রামে দশকের পর দশক বৃষ্টি ছাড়াই জীবন পার করছেন গ্রামবাসী।
গ্রামটি ইয়েমেনের রাজধানী সানায় অবস্থিত। গ্রামটির নাম আল-হুতেইব। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩২০০ মিটার উচ্চতায় লাল বালিপাথরের পাহাড়ের মাথায় গ্রামটি। জনসংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।
গ্রামটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল হিসেবে খ্যাত। দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরম। রাতের দিকে হিমশীতল ঠান্ডা নেমে আসে গ্রামে। কিন্তু সূর্য উঠতেই আবহাওয়া উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পাহাড়ের কোলে পাথর কেটে কেটে বাড়িগুলি যেভাবে তৈরি করা হয়েছে, তা নৈসর্গিক। প্রাচীনের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেল গ্রামটির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এখানে আল-বোহরা জনজাতির লোক বাস করেন।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩২০০ মিটার উচুঁতে হওয়ায় এখানকার আবহাওয়া রুক্ষ প্রকৃতির। গ্রামটি যে উচ্চতায় অবস্থিত, সেই উচ্চতায় মেঘ জমে না। মেঘ তার নীচের স্তরে জমে। ফলে এই গ্রামে বৃষ্টি হয় না। এটাই আল-হুতেইব এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এই গ্রামের পরিবেশ বেশ গরম। শীতকালে সকালের পরিবেশ খুব ঠান্ডা থাকলেও সূর্য উঠলেই প্রচণ্ড খরতাপে পোড়েন সেখানকার মানুষ।
তবে এই গ্রামের বাসিন্দাদের বৃষ্টি হওয়া বা না হওয়া নিয়ে তেমন কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তারা সেখানকার শুষ্ক পরিবেশের সঙ্গেই নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছেন।
সূত্র: আল অ্যারাবিয়া