বইয়ের গন্ধ শুঁকতে ভালোবাসেন, এই অভ্যাসকে কী বলে জানেন?

লাইফস্টাইল

এপ্রিল ২৪, ২০২২ ১২:৩১ অপরাহ্ণ

আপনি কি বইপ্রেমী? তাহলে নিশ্চয়ই বইমেলায় বই কেনার সময় হোক অথবা বইয়ের তাক থেকে বই বের করার সময়, প্রথম যে কাজটি করেন তা হলো বইয়ের পাতার ভাঁজে নাক ডুবিয়ে দেওয়া।

বইয়ের ঘ্রাণ নিতে ভালোবাসেন বহু বহু মানুষ। অনেকেই নতুন ছাপানো বইয়ের গন্ধ পছন্দ করেন, অনেকে আবার পুরনো বইয়ের ঘ্রাণ।

বইয়ের গন্ধ কেন এত নেশার?

বইয়ের গন্ধ আসলে কাগজের মধ্যে যৌগগুলির রাসায়নিক ভাঙ্গনের কারণে ঘটে। আমরা যে গন্ধ পাই তা আসলে বইটির ধীরগতির মৃত্যুর ঘ্রাণ। তাই বইটি যত পুরানো হবে তত ভালো গন্ধ বেরোবে। কাগজে সেলুলোজ এবং লিগনিন রয়েছে (সুগন্ধযুক্ত অ্যালকোহলের পলিমার যা পুরনো বইয়ের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ার জন্যও দায়ী), পুরনো বইগুলিতে বেনজালডিহাইড, ভ্যানিলিন, ইথাইল হেক্সানোল, টলুইন এবং ইথাইল বেনজিন সহ আরো কিছু রাসায়নিক রয়েছে।

পুরনো বইয়ের গন্ধের উপর একটি গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানী মাতিজা স্ট্রলিক। তার মতে, কাঠের মণ্ড থেকে সেলুলোজ এবং লিগনিনের মিশ্রণে রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে নির্গত গন্ধ, বাঁধাইয়ে ব্যবহৃত আঠা এবং কালির রাসায়নিকের ঘ্রাণ মিশে অদ্ভুত এক গন্ধ তৈরি হয়।

বইয়ের গন্ধ শুঁকতে ভালোবাসেন।

বইয়ের গন্ধ শুঁকতে ভালোবাসেন।

বইয়ের পাতার রাসায়নিকগুলো তাপ, আলো এবং পানির প্রতিক্রিয়ায় দীর্ঘকাল ধরে একটি গন্ধের জন্ম দেয়। ইথাইলবেনজিনের একটি মিষ্টি গন্ধ রয়েছে, ইথাইল-হেক্সানলের ঘ্রাণ ফুলের মতো, ফারফুরালের বাদামের মতো গন্ধ রয়েছে এবং ভ্যানিলিনের ঘ্রাণ অবশ্যই ভ্যানিলার মতো।

তবে, অনেকেই জানেন না বইয়ের ঘ্রাণ ভালো লাগার বিষয়টিকে একটি বিশেষ নামে ডাকা হয়। বইয়ের গন্ধের জন্য সেই নির্দিষ্ট শব্দটি হলো- বিবিলিওসমিয়া (Bibliosmia)।

তবে বিপণন সর্বত্রগামী। তাই ই-বুক রিডারদের বিবিলিওসমিয়ার অনুভূতি পাওয়াতে বইয়ের গন্ধযুক্ত অ্যারোসল স্প্রে এবং মোমবাতি বাজারে সহজলভ্য। এখন পেপার প্যাশন, পেপারব্যাক এবং বই ব্র্যান্ডের মতো কিছু বোতলজাত বডি-পারফিউমও বাজারে রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করে বইয়ের মতো গন্ধ পেতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *