পাঞ্জাবে ইমরান খানের দলের ভূমিধস জয়

আন্তর্জাতিক স্লাইড

জুলাই ১৮, ২০২২ ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের উপনির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। বেসরকারি ফলাফল বলছে, এখন পর্যন্ত ১৫টি আসনের ফলাফল চূড়ান্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ইমরানের পিটিআই পেয়েছে ১২টি আসন। আরও কয়েকটি আসনে এগিয়ে রয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের পিএমএল-এন পেয়েছে মাত্র দুইটি। আর এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর দখলে গেছে ১টি আসন।

রোববার (১৭ জুলাই) সারাদিন পাঞ্জাবের ২০টি আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই ২০টি আসনের চারটিই লাহোরে। সাধারণভাবে এ ধরনের নির্বাচন তেমন গুরুত্ব পায় না। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের ফলাফল পাঞ্জাবের এবং সেই সঙ্গে পুরো পাকিস্তানের রাজনীতির জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে।

বর্তমানে পাঞ্জাবের ক্ষমতায় রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। এর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ছেলে হামজা শাহবাজ শরীফ।

ক্ষমতায় থাকতে হলে তাকে এই ২০টি আসনের মধ্যে অন্তত ১০টিতে জয়ী হতে হবে। আর ক্ষমতায় ফিরতে হলে ইমরান খানের পিটিআইকে অন্তত ১৩টিতে জয়ী হতে হবে।

হামজা শাহবাজ মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন পিটিআইয়ের ২৫ জন এমপিএর সমর্থন নিয়ে। এদের মধ্যে ২০ জন সরাসরি নির্বাচিত সদস্য। বাকি পাঁচজন ছিলেন সংরক্ষিত আসনের। তারা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে শাহবাজ শরীফকে ভোট দিয়েছিলেন।

রোববার সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কয়েকটি পোলিং স্টেশনে ছোট্ট কিছু সংঘর্ষ ও অসঙ্গতি ঘটলেও এদিন সন্ধ্যায় সুষ্ঠুভাবেই ভোট শেষ হয়। ডন জানায়, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই বেসরকারি ফলাফল আসতে শুরু করে। তাতে দেখা যায়, পিটিআই বড় ব্যবধানে জয় পেতে যাচ্ছে।

এদিকে ভোটের ফলাফল নিয়ে সরকারি ঘোষণার আগেই পিটিআই অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন সাংবাদিক, রাজনীতিক ও বিশ্লেষকরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনে রীতিমতো ভাসছেন ইমরান খান। ক্ষমতাসীন পিএমএল-এনকে উপদেশ দিতেও ভুলছেন না তারা।

খ্যাতনামা সাংবাদিক খুররম হুসাইন এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, ‘ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে পাকিস্তানের তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে আবারও সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে আবারও ফিরে এসেছেন ইমরান খান। এটা ২০১৮ সালের ২৫ জুলাইয়ের চেয়েও বেশি কিছু।’

আরেক সাংবাদিক মেহরিন জাহরা মালিক এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ‘এবার আগামী সাধারণ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের জন্য আরও কঠিন হয়ে গেল।’

এদিকে পিএমএল-এন নেতারা ইতোমধ্যে নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করেছেন। সেই সঙ্গে পিটিআই’র এ ভূমিধস জয়ে অভিনন্দনও জানাচ্ছেন তারা। পিএমএল-এন ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল খুশি মনে নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিচ্ছে। তার ভাষায়, ‘যে কারও জনগণের ইচ্ছা ও সিদ্ধান্তকে বিনয়ের সঙ্গে মেনে নেয়া উচিৎ।’

এদিকে পিটিআই’র পাঞ্জাব জয়ের পর দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ দেয়ার পাশাপাশি আবারও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন ইমরান খান। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘প্রথমেই আমি আমার পিটিআই নেতা-কর্মী ও ভোটারদের ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ তারা শুধুমাত্র পিএমএল-এনকেই নয়, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকেই পরাজিত করেছেন। বিশেষ করে পুলিশি হয়রানি ও সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশনকে জবাব দিয়েছেন তারা।’

পৃথক এক টুইটার বার্তায় ইমরান আরও বলেন, ‘এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি মাত্র পথ খোলা রয়েছে; একটা বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অন্যথায় দেশ আরও বড় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *