দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর বাস্তবায়ন হয় দেশের বৃহৎ স্বপ্নের বহুমুখী প্রকল্প পদ্মাসেতু। সরকারের সর্বাত্মক চেষ্টায় আকর্ষণীয় নির্মাণশৈলীতে দৃশ্যমান স্বপ্নের সেতুতে চলছে গাড়ি। চারপাশ সেজেছে রঙিন সাজে। সেতুটি চালুর পর চোখ ধাঁধানো এ রূপ এক নজর দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। এতে পর্যটন সম্ভাবনার হাতছানি রয়েছে।
দর্শনার্থীরা জানান, পদ্মাসেতু এলাকায় সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করলে বদলে যেতে পারে স্থানীয়দের জীবনমান।
এদিকে, পদ্মাসেতুর আশপাশে থাকা রেস্টুরেন্টেও পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় বেড়েছে। কেউ বন্ধু-বান্ধব নিয়ে সময় পার করছেন। কেউবা পদ্মার ইলিশ খেয়ে পদ্মাসেতু ও তার আশপাশের রূপ উপভোগ করছেন।
পদ্মাসেতুর আশপাশের উঁচু ভবনের উপরে থাকা রেস্টুরেন্টগুলোতে মানুষের উপস্থিতি বেশ লক্ষণীয়। সেখান থেকে তারা সন্ধ্যার পরের পদ্মাসেতুর অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করছেন।
ঈদের দ্বিতীয় দিন পদ্মাসেতু দেখতে মানুষের ভিড় এতটাই প্রবল ছিল যে, মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে পার হয়ে সেতুর টোল প্লাজার আগে গাড়ির চাপে প্রায় আট কিলোমিটারের যানজট তৈরি হয়। ঈদের তৃতীয় দিন ও আজ উপড়েপড়া ভিড় দেখা গেছে।
পর্যটকরা জানান, দেশের সবচেয়ে বড় ও সুন্দর স্থাপনা হিসেবে স্বভাবতই পদ্মাসেতুর প্রতি সবার আগ্রহ রয়েছে। তাই ঈদের ছুটির সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘুরতে এসেছেন তারা।
সিলেট থেকে ঘুরতে আসা আব্দুর রহমান বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর অনলাইনে সেতুটির ছবি ও ভিডিও দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এখন ঈদের ছুটিতে স্বচক্ষে দেখতে পদ্মার পাড়ে ছুটে এসেছি। পদ্মার আশপাশে এলাকাকে নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে। পদ্মাসেতু ছাড়াও ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে দেখার মতো একটি স্থান।
তিনি আরো বলেন, সরকার যদি পদ্মাসেতুসহ তার আশপাশের এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র ঘোষণা করে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গঠন করতে পারে তবে স্থানীয়দের সার্বিক অবস্থা বদলে যাবে।
জামাল হোসেন নামের পর্যটক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। তার সাহসিকতায় পদ্মার বুকে অবিশ্বাস্য সেতু নির্মিত হয়েছে। পদ্মাসেতুতে ওঠার পর নিজেকে গর্বিত মনে হয়েছে।
মেহেদি হাসান সোহাগ নামের আরেক পর্যটক বলেন, পদ্মাসেতু এলাকায় পর্যটন প্রকল্প হাতে নেয়া সময়ের দাবি। এ এলাকায় রাতের দৃশ্য সবাইকে মোহিত করছে। দিনদিন পদ্মাসেতু এলাকায় মানুষের ভিড় বাড়বে। এখানে যেহেতু পদ্মার ইলিশ মিলছে, তাই মানুষের সমাগম আরো বাড়বে। পরিকল্পিত পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে পারলে দেশ ও পর্যটকদের উপকার হবে।
তিনি আরো বলেন, পদ্মাসেতু এলাকায় এখন গাড়িপার্কিং জরুরি। রিসোর্ট ও পার্ক করতে পারলে এলাকাটি আরো উন্নত হবে।
স্থানীয় রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা জানান, সকাল থেকে রাত সব সময় পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে। দিনের শুরু থেকে শেষরাত পর্যন্ত তাদের ব্যস্ততায় কাটাতে হয়। আর দর্শনার্থীরা রাতের বেলায় আলোয় উজ্জ্বল সেতু দেখতে উঁচু ভবনের ছাদের রেস্টুরেন্টকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
মাওয়ায় পদ্মা স্কাই ভিউ রেস্টুরেন্টের মালিক হ্যাভেন হাসান মানিক বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর থেকে অনেক পর্যটক এখানে ভিড় করছে। প্রচুর গ্রাহক-দর্শনার্থী আসছেন। তাদের চাহিদা পূরণে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।