পদ্মাসেতুকে কেন্দ্র করে মাদারীপুরের মানুষের জীবন-জীবিকার মান পরিবর্তন ও বেকারত্ব দূর করতে ৫০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে কয়েকটি প্রকল্পে কাজ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। প্রশাসন ও সচেতন মহল মনে করছে, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে বদলে যাবে মাদারীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের চিত্র।
একাধিক সূত্রমতে, পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি মাদারীপুরে বিভিন্ন খাতে লাগতে শুরু করেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এরই মধ্যে পদ্মার পাড়ে ৭০ একর জায়গায় দেশের প্রথম ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইটি) ইনস্টিটিউট ও হাইটেক পার্ক এবং বেনারসি পল্লী নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চরাঞ্চলে অলিম্পিক ভিলেজ নির্মাণের ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। চরজানাজাত এলাকায় এক হাজার একর জমিতে মাটি ভরাট করা হচ্ছে অলিম্পিক ভিলেজ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে। পাশেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণের জন্য গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় থেকে ১২০০ একর জায়গা শনাক্ত করা হয়েছে।
শিবচরের বাসিন্দা খোকা ব্যাপারী বলেন, পদ্মাসেতু হওয়ার কারণে এ অঞ্চলে বড় বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে। মনেই হয় না, আমরা গ্রামে আছি, হাতের নাগালেই সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি, সামনে আরো পাব। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আমাদের অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
শিবচর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিএম আতাহার ব্যাপারী বলেন, যে জায়গার দাম ছিল প্রতি শতাংশ ১০ হাজার, পদ্মাসেতুর কারণে সেই জমি বিক্রি হচ্ছে ৫ লাখ থেকে ৭০ লাখে। আমাদের জীবনযাত্রার মানও বেড়ে যাচ্ছে। এ অঞ্চল থেকে নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। চরাঞ্চলের মানুষের জীবন হবে সহজ ও উন্নত।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, সেতুকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক চিত্র বদলে যাচ্ছে। সরকার বড় বড় প্রকল্প হাতে নেয়ায় মাদারীপুর তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হচ্ছে উর্বর জনপদ। এখান থেকে বিভিন্ন কারখানার উৎপাদিত পণ্য পায়রা সমুদ্র বন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পৌঁছে যাবে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, শিবচর উপজেলায় বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কিছু প্রকল্পের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। আর কিছু কাজ শুরু হয়েছে। এসব প্রকল্পের কারণে আগামীতে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে মাদারীপুর। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।