নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: তিন মামলায় আসামি ১২০০

দেশজুড়ে স্লাইড

এপ্রিল ২১, ২০২২ ১২:৪০ অপরাহ্ণ

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে বিস্ফোরণ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাওপোড়াও, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দুটি মামলা করেছেন নিউমার্কেট থানার এসআই মেহেদী হাসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির। আর সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত ডেলিভারিম্যান নাহিদ মিয়ার চাচা মো. সাঈদ হত্যার অভিযোগ এনে অন্য মামলাটি করেছেন। মামলায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট এক হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

নিউ মার্কেট থানা সূত্রে জানা যায়, বিস্ফোরক আইনে ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা দুটি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কাইয়ুম।

তিনি বলেন, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে এজাহারে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। সেই সঙ্গে অজ্ঞাত হিসেবে ব্যবসায়ী ও কর্মচারী নাম দেওয়া হয়েছে এবং ঢাকা কলেজের ৭০০ জনকেও আসামি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা আরেকটি মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে বুধবার (২০ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবে অবস্থিত বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ব্যবসায়ী মালিক সমিতি, ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শেষে মার্কেট খোলার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকে সবকিছু স্বাভাবিক। বৈঠক শেষে রাত ৪টায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ। বৈঠকে বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও রাস্তার দুই পাশেই পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সকাল থেকে রাখা হয়েছে সাঁজোয়া যান। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি তারা।

দুই দোকানের কর্মীদের বিরোধের জেরে গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়। মধ্যরাতে দুপক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

এরপর মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকালে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিলে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড়-সায়েন্স ল্যাব এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সন্ধ্যার পরও ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেটসহ আশপাশ এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা যায়।

তিন দিনের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১১ সাংবাদিক, ঢাকা কলেজের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এবং ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় নাহিদ (১৮) নামের এক কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ভোর ৪টা ৩৬ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সংঘর্ষে আহত আরেক দোকান কর্মচারী মোরসালিন (২৬)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *