নিউইয়র্কে যেসব কর্মসূচিতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় স্লাইড

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২ ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ

১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়েস্ট মিনিস্টার অ্যাবেতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে নিউইয়র্কের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করবেন। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত।

২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস আয়োজিত সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী ইউএনএইচসিআরের ফিলিপো গ্রান্ডি এবং স্লোলোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। একই দিন তিনি নারী নেত্রীদের ইউএনজিএ প্ল্যাটফর্মেও যোগ দিবেন। দিনের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত সংবর্ধনাতেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ, বতসোয়ানা, স্লোভাক প্রজাতন্ত্র ও ইউএন হ্যাবিট্যাটের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চ পর্যায়ের টেকসই আবাসন শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। একই দিন তিনি ডব্লিউইএফের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর শোয়াব ক্লাউসের সাথে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ (জিসিআরসি) চ্যাম্পিয়নস মিটিংয়ে যোগ দেবেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পদ্মা সেতুর আলোকচিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করবেন। এরপর তিনি কসোভোর প্রেসিডেন্ট ড. ভজোসা ওসমানি-সাদ্রিউ, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসো মেন্ডোজা এবং রাবাব ফাতিমার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর দিনটি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের (এএমআর) ওপর একটি প্রাতঃরাশ বৈঠকের মাধ্যমে শুরু করবেন এবং আইওএম মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিটোরিনোর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সাথে একটি উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেবেন। পরে তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী সামদেচ আক্কা মোহা সেনা প্যাদেই তেকো হুন সেন এবং আইসিসির প্রসিকিউটর নিক ক্লেগ এবং করিম খানের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ‘ট্রান্সফর্মিং এডুকেশন সামিট (টিইএস)’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণ করতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ ওই দিন ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি লন্ডনে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন। ফলে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপুমনি উক্ত সামিটে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে জানা গেছে। এজন্য বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপুমনি নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন।

প্রধানমন্ত্রী ২০ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএ নারী নেতাদের প্ল্যাটফর্মের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকটিতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। সংকট মোকাবিলায় নারী নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা, গৃহীত উত্তমপন্থা এবং সংকট মোকাবিলায় তাদের সাফল্য বৈশ্বিক বিভিন্ন সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ লক্ষ্যে ৭৬তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি নারী নেতাদের প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ সভায় প্রধানমন্ত্রী সংকট মোকাবিলায় তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে তার নেতৃত্বের সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরতে পারেন।

গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের (জিসিআরজি) চ্যাম্পিয়নদের সভা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সভাটি ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। উচ্চপর্যায়ের এ গ্রুপে ছয়জন চ্যাম্পিয়নের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যতম। বৈঠকে জি-৭, জি-২০ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন।

২২ সেপ্টেম্বর অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বিষয়ক একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধানমন্ত্রী কো-চেয়ার হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ও বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং বিশ্ব প্রাণী স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে গঠিত ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডারস গ্রুপ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)’ শীর্ষক গ্রুপের সহ-সভাপতি।

২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্ক পর্বে বক্তব্য রাখবেন। প্রতিবারের মতো এবারো প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বক্তৃতা দেবেন। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের অভাবনীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রযুক্তি খাত বিকাশে সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রতিবারের ন্যায় বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। কসভোর প্রেসিডেন্ট, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট, স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ মহাসচিব, জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নির্বাহী পরিচালকের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

প্রতিবারের মতো এবারো প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের আয়োজনে একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন। এই বৈঠকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধার বিষয়সমূহ উপস্থাপনা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ প্রস্তাব বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরবেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি হবে।

২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এছাড়া ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজির একটি নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *