করোনা মহামারির পর এবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স। ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্স রোগীদের নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে অজানা ভয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রতিটি বন্দরে (নৌ, স্থল এবং বিমান) অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
মাঙ্কিপক্স আসলে একটি জুনোটিক ভাইরাস। যা প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ছড়ায়। এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইনফরেস্টের কাছাকাছি এলাকায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি ঘটে।
আসলে এটি কতটা মারাত্মক? নিচে এই রোগে অদ্যোপান্ত তুলে ধরা হলো-
উপসর্গ
রোগটির প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে ফোলাভাব, পিঠে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা। একবার জ্বর কমে গেলে ফুসকুড়ি তৈরি হতে পারে। মুখ থেকে শুরু করে এ ফুসকুড়ি পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হাতের তালু এবং পায়ের তলায় এ ফুসকুড়ি বেশি দৃশ্যমান হয়। ফুসকুড়িতে চুলকানি হতে পারে।
ভাইরাসটি নির্মূলের পর ক্ষতের দাগ থেকে যেতে পারে। ভাইরাসটি নিজে থেকেই দুর্বল হয়ে মারা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে ১৪ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
কীভাবে আক্রান্ত হতে পারেন
সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে মাঙ্কিপক্স ছড়াতে পারে। ভাইরাসটি শরীরের কোষত্বক, শ্বাসতন্ত্র বা চোখ, নাক বা মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এটি সংক্রামিত প্রাণী যেমন বানর, ইঁদুর এবং কাঠবিড়ালির সংস্পর্শে বা ভাইরাস-দূষিত বস্তু যেমন বিছানা ও পোশাকের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
চিকিৎসা কী
মাঙ্কিপক্সের কোনো চিকিৎসা নেই, তবে সংক্রমণ প্রতিরোধের মাধ্যমে প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে গুটিবসন্তের বিরুদ্ধে টিকা ৮৫ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। জানা গেছে, হাজার হাজার ডোজ গুটিবসন্ত টিকা অর্ডার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে স্পেন।
রোগটি কতটা বিপজ্জনক
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাইরাসটি হালকা প্রকৃতির। মাঙ্কিপক্স কখনো কখনো অনেক গুরুতর হতে পারে। পশ্চিম আফ্রিকায় ভাইরাসটির সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে এ রোগে মৃত্যুর হার ১০ শতাংশ বলে জানা গেছে।