মানবসভ্যতার ইতিহাসে এ যাবৎকাল পর্যন্ত সংঘটিত সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। সেই ভয়াবহ বিশ্বযুদ্ধের ১৯৪৪ সালের ২৪ মার্চ রাতে নাৎসি স্তালাগ লাফট থ্রি যুদ্ধবন্দি শিবির থেকে পালিয়ে যায় পশ্চিমা মিত্রবাহিনীর একদল সেনা। যাদের একজনের হাতে ছিল রোলেক্সের ঘড়ি। সেই সময়ের সেনার ব্যবহৃত রোলেক্সের ঘড়িই সম্প্রতি নিলামে বিক্রি হয়েছে। ৯ জুন (বৃহস্পতিবার) ঘড়িটি নিলামে তুলে ব্রিটিশ নিলাম কোম্পানি ক্রিস্টি। খবর এএফপির।
১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, এ ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হলেও ১৯৩৯ সালের আগে এশিয়ায় সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার মূল নায়ক ছিল আডলফ হিটলার। এ যুদ্ধের অক্ষশক্তির প্রধান তিনটি রাষ্ট্র হলো জার্মানি, ইতালি এবং জাপান এবং মিত্রশক্তির প্রধান ছিল ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়াম।
ঘড়িটির মালিক ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক জেরাল্ড ইমেসন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হাতে ব্যবহার করার জন্য সুইজারল্যান্ডের রোলেক্স থেকে ঘড়িটি অর্ডার করেছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রপক্ষের বিভিন্ন দেশের সেনাদের পাশাপাশি এ ব্রিটিশ সেনাও জার্মানির যুদ্ধ শিবিরে বন্দি ছিলেন। ১৯৪৪ সালের ২৪ মার্চ শিবির থেকে পালানোর সময় তার হাতে ছিল সেই রোলেক্সের ঘড়িটি।
ইমেসনের ব্যবহৃত সেই স্টিলের ঘড়িটির ডায়াল কালো রঙের। সেসময় বন্দি শিবির থেকে নিজ সহ সবাইকে মুক্ত করার পরিকল্পনায় এ ঘড়িটি সাহায্য করেছিল। সময়ের সঠিক তথ্য তখন এত বেশি গুরুত্ব থাকায় রেডক্রসের মাধ্যমে ঘড়িটি বন্দি শিবিরে পৌঁছানো হয়েছিল।
যদিও পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম চেষ্টায় প্রাথমিকভাবে ৭২ জন পালাতে সক্ষম হলেও ইমেসন পারেননি। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর আরেকটি বন্দি শিবির থেকে ইমেসনকে মুক্ত করা হয়। ২০০৩ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত ঘড়িটি পরতেন ইমেসন।
নিলামে ঘড়িটির দাম চার লাখ ডলার উঠবে বলে আশা করেছিল নিলাম কোম্পানি ক্রিস্টি। তবে শেষ পর্যন্ত এটি প্রায় ২ লাখ ডলারের দামে বিক্রি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এ রোলেক্সের ঘড়িটির দাম ওঠে ১ লাখ ৮৯ হাজার ডলার। এ হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী এ ঘড়িটির মূল্য বাংলাদেশি অর্থে দাঁড়ায় ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।