'থার্টিফার্স্ট নাইটে সড়কে বা বাড়ির ছাদে পার্টি করা যাবে না'

‘থার্টিফার্স্ট নাইটে সড়কে বা বাড়ির ছাদে পার্টি করা যাবে না’

জাতীয় স্লাইড

ডিসেম্বর ৩১, ২০২২ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ

আজ শনিবার চলতি বছরের শেষ সূর্যাস্ত। এরপরই ২০২৩ সালের আগমন। প্রথম প্রহর রাত ১২টার পর নতুন বছর বরণে সারা বিশ্বে শুরু হবে রাতভর আনন্দ আয়োজন। আতশবাজি, হই-হুল্লোড় আর আলোর ঝলকানিতে ছেয়ে যাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো রাজধানীর ঢাকার আকাশ। করোনা মহামারী, দেশজুড়ে নাগরিকদের নিরাপত্তা, বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে থার্টিফার্স্টের মতো যেকোনো অনুষ্ঠান উদযাপনে গত কয়েক বছর ধরেই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করছে প্রশাসন। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে মাদকের অপব্যবহার রোধে কঠোর বার্তা দিয়েছেন।

বরাবরের মতো এবারও থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে রাজধানীকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখার প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা। তবে এখনো নাশকতার কোনো তথ্য নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।

ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। রাজধানী জুড়ে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উন্মুক্ত স্থানে কোনো ধরনের ডিজে পার্টি করতে দেওয়া হবে না।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে বাড়তি নিরাপত্তা। বহিরাগত প্রবেশ সীমিত করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত চলাচল ও গাড়ি চলাচল সীমিত করা হবে। এ ব্যবস্থাপনায় আমাদের মোবাইল টিম, স্বেচ্ছাসেবক, রোভার, রেঞ্জার বিএনসিসি সকলেই সম্পৃক্ত থাকবে।

তিনি বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট পালনে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে। আমরা সবাইকে আহ্বান জানাব সুশৃঙ্খলভাবে নিরাপত্তা ও আনন্দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন করবেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, থার্টিফার্স্ট নাইটে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই। তবে জঙ্গি ছিনতাই, রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ এবং মিছিল এ সবকে কেন্দ্র করে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর একটু বেশি সতর্ক অবস্থানে থাকবে পুলিশ। বাসায় কিংবা বাড়ির ছাদে কোথাও জনসমাগম করে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপনের সুযোগ নেই। তবে সীমিত আকারে ঘরের ভেতরে পরিবারের সঙ্গে নিজেরা উদযাপন করতে পারবে। কোনো জনসমাগম করা যাবে না।

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ‘বড়দিন’ এবং থার্টিফার্স্ট নাইটের আইনশৃঙ্খলা ও আনুষঙ্গিক বিষয়সংক্রান্ত সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, থার্টিফার্স্ট নাইটকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মাদকের অপব্যবহার রোধে আগামী ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা বার বন্ধ থাকবে। এদিন কোথাও কোনো উন্মুক্ত কনসার্ট আয়োজন করা যাবে না। তবে মহানগর পুলিশের অনুমতি নিয়ে কনসার্ট করা যাবে। রাস্তায় যানজট করা যাবে না। কেউ অবৈধভাবে মাদক বিক্রি করতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা রাখা হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটে রাস্তায় কিংবা ফ্লাইওভারে কোনো কনসার্ট ও নাচ-গানের আয়োজন করা যাবে না। আতশবাজি, ভুভুজেলা, পটকা ফুটিয়ে জনজীবনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা যাবে না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাতটি ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে রাজধানী। পটকা-আতশবাজিও ফোটানো যাবে না। নিষিদ্ধ থাকছে প্রকাশ্য অস্ত্রবহন। বেপরোয়া রেসিং নিয়ন্ত্রণে মোড়ে মোড়ে থাকবে চেকপোস্ট। তবে সীমিত আকারে হোটেলগুলোর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। কিন্তু কোনোভাবেই ডিজে পার্টি করতে দেওয়া হবে না।

পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) সূত্রে জানা গেছে, বরাবরের মতন তাদের টহল টিম সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে। কোনো ধরনের নাশকতার তথ্য নেই তাদের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *