তামিমের অপয়া '৯৫'

তামিমের অপয়া ‘৯৫’

খেলা

ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

মানুষের জীবনে ‘অপয়া’ শব্দটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যদিও বিজ্ঞানের ভাষায় কিংবা অভিধানে এসবের স্থান নেই। কিন্তু ক্রিকেট কিংবা ফুটবলে এই ‘অপয়া’ শব্দের ব্যবহার বহুল। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অবশ্য এই বালাই নেই। তবে তামিম ইকবাল এবার একটু নড়েচড়ে বসতে পারেন। তার জীবনে যে জড়িয়ে গেছে অপয়া দুটি সংখ্যা ‘৯৫’..

তামিমের ক্যারিয়ারে এই ৯৫ রানে থেমে যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়। সময়ের ঘড়ির কাটা পেছনে টেনে নিলেই দেখা মিলবে পাঁচটি ‘৯৫-এ বেদনার গল্প’। তাতে ক্যারিয়ারে পাঁচবার সেঞ্চুরি বঞ্চিত হতে হয়েছে তামিমকে। আরেকবার ঘুরে আসা যাক অপয়া ‘৯৫’ এর পাঁচটি গল্পে…

১. ৯৫ বনাম জিম্বাবুয়ে, ২০১০

২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে। খেলাটা নিজ শহর চট্টগ্রামে। এর আগে ঘরের মাঠে তামিমের কোনো সেঞ্চুরি ছিলো না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই তামিমের ব্যাট চলছিলো খাপ খোলা তলোয়ারের মতো।

একে একে সাতটি ছক্কা মারা তামিমের রান তখন ৯৫। আরেকটা ছক্কা মারলেই ঘরের মাঠে প্রথম তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার। কিন্তু এই আরেক ছক্কা ডেকে আনলো তার বিপদ। দাবেংওয়ার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৯৫ রানে ধরা খেলেন ডিপ মিড উইকেটে।

২. ৯৫ বনাম নিউজিল্যান্ড, ২০১৩

তামিমের দ্বিতীয় ৯৫ রানে আউটও ঘরের মাঠে। ২০১৩-এর অক্টোবরে মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই টেস্টটার দফারফা করে দিয়েছিল বৃষ্টি। তামিমের সামনেও সুযোগ ছিলো প্রায় সাড়ে তিন বছরের সেঞ্চুরি খরায় এক পশলা শ্রাবণ ধারা বইয়ে দেওয়ার।

তবে পারলেন না তামিম। ধরা খেলেন ৯৫ তে। বলা যায়, কিউই অধিনায়কের ফাদে পড়েই সর্বনাশ ডেকে এনেছিলেন তামিম। আগের বলে ফাঁকা স্লিপের সুযোগ নিয়ে চার মেরে পরের বলেই একই কাজ করতে গিয়ে গালিতে ধরা খেলেন উইলিয়ামসনের হাতে।

৩. ৯৫ বনাম স্কটল্যান্ড, ২০১৫

তামিমের তৃতীয় ৯৫ তার কাছে আজীবন একটা আক্ষেপের নাম হয়ে থাকবে। ২০১৫ বিশ্বকাপের কথা। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ। এই ম্যাচে আর মাত্র পাঁচটা রান তামিম করতে পারলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিয়ানের নামটা হতো তামিমই।

ম্যাচের শুরু থেকেই দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন তামিম। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান, চারের ফুলঝুরি কিংবা সুন্দর শটের পসরা; সবই ছিলো তার ব্যাটিংয়ে। এমন ভালো খেলতে খেলতেই আরেকবার সেঞ্চুরিটা বিসর্জন দিয়ে আসলেন। তাও স্লিপ ফিল্ডারের হাতে।

৪. ৯৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া, ২০১৭

তামিমের চতুর্থ সেঞ্চুরি মিস তথা ৯৫ রানও একটা উপলক্ষ্যের কারণ হতে পারতো। লর্ডসের মতো ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরির মালিক হতে পারতেন খান সাহেব। কেননা, এই মাঠেই আগের ম্যাচে ১২৮ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলেছিলেন তামিম।

তবে তা হলো না। ৫৩ রানে বাংলাদেশের তিন উইকেট নেই। একদিকে আগলে রেখে লড়াই করে যাচ্ছেন তামিম। দারুণ খেলতে থাকা তামিম একসময় পৌছে যান সেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। হঠাৎ লেগ স্টাম্পে করা মিচেল স্টার্কের শর্ট বলে বোকা বনে গেলেন।

৫. ৯৫ বনাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, ২০২৩

তামিমের আগের সবকটি ৯৫ রানের ইনিংস ছিলো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। সবশেষ সেঞ্চুরি মিসটা হলো ঘরোয়া ক্রিকেটে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসরে। সিলেট পর্বের ম্যাচে ধীরে শুরু করা তামিক ঝড় তুললেন ফিফটির পর।

তামিম ঝড়ে লণ্ডভণ্ড কুমিল্লা যখন দিশেহারা। ঠিক তখনি জুয়ার চালটা চাললেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। বোলিংয়ে আনলেন মোসাদ্দেককে। মোসাদ্দেকের ঘূর্ণি জাদু বুঝতে না পেরে লং অফে ধরা খেয়ে শেষ হয় তামিমের পঞ্চম ৯৫-এর গল্প।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *