ট্রুডোর সঙ্গে শি’র কথোপকথনের ব্যাখ্যা দিল চীনা মন্ত্রণালয়

ট্রুডোর সঙ্গে শি’র কথোপকথনের ব্যাখ্যা দিল চীনা মন্ত্রণালয়

আন্তর্জাতিক

নভেম্বর ১৮, ২০২২ ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে গোপন আলোচনা ফাঁস করার অভিযোগ এনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে জড়িয়েছেন বলে খবর প্রচার হয়।

বুধবার জি-২০ সম্মেলনের মঞ্চের একপাশে এ দুই নেতাকে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখা যায়। পরে জানা যায়, ট্রুডোকে পেয়ে নিজের ক্ষোভ ঝেড়েছেন শি জিনপিং।

তবে সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং। একটি নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, বেইজিং সবসময় খোলামেলা আলোচনা পছন্দ করে এবং চীন আশা করে যে, কানাডাও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নেবে।

তিনি বলেন, আপনারা যে ভিডিওটি উল্লেখ করেছেন তা আসলেই জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় উভয় নেতার সংক্ষিপ্ত কথোপকথন ছিল। এটি খুবই স্বাভাবিক। আমি মনে করি না যে, এই কথোপকথন নিয়ে শি জিন পিং বা কাউকে অভিযুক্ত করা উচিত।

মাও নিং বলেন, আমি প্রথমেই পরিষ্কার করে দিতে চাই যে, চীন কখনই অন্য দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।

তিনি বলেন, তাদের মধ্যে কথোপকথনে কোনো হুমকি ছিল না। কারণ উভয় নেতাই ‘স্বাভাবিক’ ভঙ্গিতে কথা বলছিলেন এবং  শুধুমাত্র নিজেদের অবস্থান প্রকাশ করেছিলেন।

এর আগে মঙ্গলবার সম্মেলনের ফাঁকে ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেছিলেন শি জিনপিং। তার অভিযোগ, সেই বৈঠকের সব তথ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছেন ট্রুডো। এ কারণে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন শি জিনপিং।

ট্রুডো ও জিনপিংয়ের মধ্যে হওয়া কথোপকথনের একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ইংরেজি অনুবাদক নিয়ে ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলছেন শি জিনপিং।

তিনি ট্রুডোকে উদ্দেশ করে বলেন, আমরা যা নিয়ে কথা বলেছি তার সব কিছু মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে, এটি ঠিক নয়। এভাবে কূটনীতি হয় না।

তখন ট্রুডো শি জিনপিংকে বলেন, আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।

ট্রুডো আরও বলেন, আমরা স্বাধীন ও খোলামেলা আলোচনায় বিশ্বাসী এবং এটি আমরা করে যাব। আমরা দৃঢ়ভাবে একসঙ্গে কাজ করে যাব কিন্তু এর মধ্যে কিছু থাকবে, যা নিয়ে আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকবে এবং এ নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

এতটুকু বলার পর ট্রুডোকে থামিয়ে দেন শি জিনপিং। বলেন, এর আগে চলুন এ রকম পরিবেশ তৈরি করি। এরপর ট্রুডোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলে যান শি জিনপিং।

এদিকে গত মঙ্গলবার চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর বিবৃতি দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। সেই বিবৃতিতে তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে বাণিজ্য ও চীনের হাতে কানাডিয়ান বন্দি এবং কানাডার নির্বাচনে চীনের হস্তক্ষেপের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তিনি।

কানাডার অটোয়ার কার্লেটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক অধ্যাপক স্টেফেন কারভিন শি জিনপিংয়ের এমন কঠোর ভাবভঙ্গির বিষয়ে বলেছেন, ট্রুডো কানাডা সংবাদমাধ্যমগুলোকে যেভাবে বৈঠকের আলোচিত বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন এটি ভালোভাবে নেননি শি জিনপিং। এখন ‘নিজের মুখ বাঁচাতে’ ট্রুডোকে পেয়ে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, দিনশেষে কানাডা ইউরোপ অথবা যুক্তরাষ্ট্র না এবং শি জিনপিং জানেন তিনি কানাডার ওপর প্রকাশ্যে আরও আগ্রাসী মনোভাব দেখাতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *