ঝিনাইগাতীতে সম্মেলন সমাপ্ত না হওয়ায় নেতৃত্ব শুন্য আওয়ামী লীগ

দেশজুড়ে

আগস্ট ৬, ২০২২ ৪:১০ অপরাহ্ণ

মুরাদ শাহ জাবাল, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের অসমাপ্ত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন চার মাসেও সমাপ্ত হয়নি। ফলে নেতৃত্ব শুন্য হয়ে পড়েছে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগ। এ সম্মেলন সমাপ্তের দাবি তুলেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় এবং জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় এ সম্মেলন। সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন শেষে পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। পরে দ্বিতীয় অধিবেশন হওয়ার কথা থাকলেও তা আর হয়নি। দ্বিতীয় অধিবেশন না করেই অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গত চার মাস অতিবাহিত হলেও দ্বিতীয় অধিবেশন আর হয়নি। ঘোষণা করা হয়নি সভাপতি/ সম্পাদকের নামও। এ নিয়ে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনার পাশাপাশি ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।

কে হচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি / সম্পাদক? এ নিয়ে জল্পনা কল্পনার যেন শেষ নেই। কাকে দেয়া হবে সভাপতি / সম্পাদক। তাদের ব্যক্তি ইমেজ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান কার কতটুকু আছে। নেতৃত্ব দেয়ার সাহসিকতা, যোগ্যতা, কার কতটা আছে এ নিয়ে তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

ইতিমধ্যে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়কে সভাপতি ও নবাগত মিজানুর রহমান মিলনকে সম্পাদক করা হয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে বিষাদের ছায়া। তাদের মতে দলকে এগিয়ে নিতে হলে যোগ্য নেতাকে সভাপতি হিসেবে দেখতে চান।

দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করতে ১৯৯১ সালে শিল্পপতি এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইমকে দলে আনেন তৎকালীন দলের দায়িত্বে থাকা নেতৃবৃন্দ। পরবর্তীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন নাইম। দুর্দিনে তিনিই দলকে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন।

২০১৪ সালে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দ্বিতীয় দফায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ভোটে তিনি পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন। এ সময় পদ বঞ্চিত হয় কতিপয় নেতা। তারা পরবর্তী সময়ে নৌকার নির্বাচনে বিরোধীতা করেন। কেউ কেউ বিএনপি প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। আবার কেউ কেউ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

নৌকার নির্বাচনে বিরোধিতাকারীরা দলের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে খাটি আওয়ামী লীগার বনে যান কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে। তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার করে নাইমকে সরিয়ে দিয়ে দলকে নেতৃত্ব শুন্য করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।

মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মোজাম্মেল হক, হাতিবান্দার সভাপতি শাওকাত জহির বাবুল, নলকুড়ার সভাপতি মোঃ আইয়ূব আলী ফর্শা, গৌরিপুরের সভাপতি আব্দুল্লাহ, কাংশার সভাপতি আজিজুল হক ধলু, ধানশাইলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, ঝিনাইগাতী সদরের সভাপতি খলিলুর রহমানসহ ৭ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও ৬৩ ওয়ার্ডের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

তাদের দাবি- দুর্দিনে নাইম যেহেতু দলের কান্ডারী ছিলেন। সে হিসেবে তাকেই পুনরায় দলের সভাপতি করা হোক। অন্যথায় গণতান্ত্রিক পন্থায় অসমাপ্ত সম্মেলন সমাপ্ত করার দাবি জানান তারা।

কেন্দ্রীয় কমিটি অথবা জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সভাপতি/ সম্পাদকের নাম ঘোষণা অথবা অসমাপ্ত সম্মেলন সমাপ্তিতে যতই বিলম্বিত হচ্ছে তৃণমুলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক পন্থায় সম্মেলন সমাপ্তির দাবি ততই জোরালো হচ্ছে। এ বিষয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা নাইম বলেন, আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একজন আদর্শের সৈনিক। গত প্রায় ৩০ বছর ধরে দলকে এগিয়ে নিয়ে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে বাকি জীবন কাটাতে চাই। জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *