জাল নোট আতঙ্ক, সক্রিয় দুই শতাধিক চক্র

জাতীয় স্লাইড

জুলাই ৯, ২০২২ ৯:১১ পূর্বাহ্ণ

ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে জাল নোট চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব জাল নোট ছাড়তে রাজধানীসহ সারাদেশে সক্রিয় দুই শতাধিক চক্র। যারা ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকার নোট জাল করে বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতারক এই চক্র থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

তারা বলছেন, এসব চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। সাজাও হয়। কিন্তু পরক্ষণে চক্রটি আবারো জাল নোট ছড়ানোর কাজে তৎপর হয়ে ওঠে। সম্প্রতি এসব চক্র অনলাইন প্ল্যাটফরমকে জাল নোটের কারবারে ব্যবহার করছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি সূত্র জানায়, জাল নোট চক্রের সদস্যরা মূলত কোরবানির ঈদকে টার্গেট করে। পশুর হাটে জাল টাকা ছড়িয়ে দিয়ে মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায়। এই চক্রের সদস্যদের ধরতে অতিরিক্ত নজরদারি ও সোর্স বাড়ানো হয়েছে। কোরবানির পশুর হাটে জাল নোট কোনোভাবেই ছড়াতে দেওয়া হবে না।

অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, জাল নোটের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আরো গতিশীল করা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই জাল নোট ছড়ানো বন্ধ হবে বলেও মনে করেন তারা।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি এ চক্রের সদস্যরা আারো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা জাল নোট বিক্রির জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফরম ব্যবহার করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সচেতনতার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে জাল টাকা চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা (গুলশান) বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম। এ সময় একটি ল্যাপটপ, দুটি প্রিন্টার, পাঁচটি স্ক্রিন প্রিন্ট ফ্রেম, চার হাজার পিস জাল নোট তৈরির সাদা কাগজ, আট পিস ইঙ্কজেট কালি, একটি সিকিউরিটি থ্রেট পেপার রোল, পাঁচটি প্লাস্টিকের সাদা কালির কৌটা, দুটি কাটার, দুটি স্টিলের স্কেল এবং ১০০০ টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ৪৮ লাখ জাল নোট উদ্ধার করা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা হলো- মো. রফিকুল ইসলাম ছাকির, মো. আবু বক্কর রিয়াজ প্যাদা, মো. মনির হোসেন ও বিউটি। শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে জাল টাকা চক্রের সদস্যরা সক্রিয়। বিশেষ করে পশুর হাটকে টার্গেট করে বেপরোয়া তারা। আমরা চক্রের মূল হোতাদের ব্যাপারে নজরদারি রাখছি।

তিনি আরো বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে কোরবানির পশুর হাটে আমাদের বিশেষ টিম কাজ করছে। মানুষ যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই বিষয় মাথায় রেখে আমরা সর্তক রয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *