গয়েশ্বর বাবু, আপনার নিজ দলে গণতন্ত্র আছে?

ফিচার স্পেশাল স্লাইড

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ ৫:৪৯ অপরাহ্ণ

আদম তমিজী হক

বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এখন ভারত সফরে আছেন। প্রতিবেশী দেশটির সাথে আমাদের পুরনো বন্ধুত্ব রয়েছে, তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। এমন বাস্তবতায় গাত্রদাহ থেকে জ্বলছে কথিত জাতীয়তাবাদী শক্তি।

সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও তাই অকপটে বললেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জ্বলছি। এই জ্বলার পরিণতি মানুষ পুড়িয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি পুনরায় তারা শুরু করবেন কিনা, সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। কিন্তু, গয়েশ্বর বাবুর ‘গণতন্ত্র’, বিশ্ব পরিভ্রমণে যাওয়ার আগে নিজের ঘরের দিকে তাকাবেন কিনা, তা নিয়ে অর্থবহ প্রশ্ন থাকছে।

বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ভারতের উচিত হবে না ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থন দেওয়া। খুব জোর গলায় বললেন, ভারত তা করলে এতে করে গণতান্ত্রিক বিশ্ব নারাজ হবেন।

গয়েশ্বর বাবু আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদী বলে গালমন্দ করলেন। তাঁর কাছে আমার জিজ্ঞাসা, আপনার দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের অনুশীলন আছে? যদি তাই থাকে, তাহলে এই দলের শীর্ষ নেতার পদ আঁকড়িয়ে যারা রয়েছেন, তারা তো উভয়েই দণ্ডিত আসামি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দলটিকে সাজান না কেন? আজ এক যুগে প্রবাসী এক সন্ত্রাসীর কথায় আপনার দল চলে। আপনার ঘরের মধ্যে গণতন্ত্র কোথায়?

ফ্যাসিবাদ এর কথা বলে যা আপনাদের কণ্ঠে ধ্বনিত, তা কি একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার আনার বন্দোবস্ত কিনা, তা নিয়েও নিজেদেরকে প্রশ্ন করেন। রাজনীতির বাঁকা রাস্তায় হেটে ক্ষমতার মসনদ খুঁজতে চাইবার অপপ্রয়াস কে রুখতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত আছে বলে মনে করার সুযোগ আছে। আপনারা মানুষের জন্য রাজনীতি করতে পারছেন? দলের দুই কথিত শীর্ষ নেতৃত্বের মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে হবে, এই যদি হয় আপনাদের রাজনীতি- তাহলে আর ক’দিন পরে ভাড়াটে লোকও আর পাবেন না। সময় থাকতে জনকল্যাণের রাজনীতি শুরু করেন। দলকে গঠন করেন। গণতাত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব বাছাই করেন। অতঃপর দেশের জন্য পরিকল্পনা করে রাজনীতি আরম্ভ করেন।

ভারত, আমাদের একান্ন বছরের পুরনো মিত্র। তাঁরা একজন বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। তারা তাঁদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কে সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশে ইতিবাচক রাজনৈতিক শক্তিকে সমর্থন দিয়ে থাকে। কিন্তু, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আসে জনগণের দ্বারা। জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে ছিল, আছে ও থাকবে।

বিএনপির অপর নেতা রুহুল কবীর রিজভী সাহেবকেও দেখালাম বলতে। তিনি বলছেন, দেখতে হবে এবার কতটুকু সার্বভৌম বিক্রি করে আসা হয়েছে? রিজভী সাহেবেরা এসব বিষয়ে খুব ভালো বলতে পারেন! ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে নিয়ে আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে রিজভী সাহেবের ভাইয়া রাজনৈতিকভাবেও অতীতে খেলেননি, ব্যবসা করেছেন।

আয়নায় তাই মুখ দেখুন। গয়েশ্বর বাবুদের রাজনীতি আসলে নেই। দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে। বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে আপনাদের মোকাবিলা করার সামর্থ্য আওয়ামী লীগের রয়েছেও।

লেখক: রাজনীতিক ও সমাজকর্মী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *