গুলি করে হত্যার পর পুঁতে রাখা হয় ব্রিটিশ সাংবাদিককে

আন্তর্জাতিক স্লাইড

জুন ২০, ২০২২ ৯:০২ পূর্বাহ্ণ

ব্রাজিলের আমাজন বনে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক ও স্থানীয় এক আদিবাসী বিশেষজ্ঞকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে (৫ জুন) অপহরণের পর তাদেরকে হত্যা করা হয়। এরপর তাদের মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ওই ব্রিটিশ সাংবাদিকের নাম ডম ফিলিপস। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের রিপোর্টার ছিলেন তিনি। ৫৭ বছর বয়সী এ ব্রিটিশ নাগরিক আমাজনে আদিবাসীদের নিয়ে গবেষণা করছিলেন। আর স্থানীয় আদিবাসী বিশেষজ্ঞের নাম ব্রুনো পেরেইরা। ৪১ বছর বয়সী এ যুবক আদিবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছিলেন।

ব্রাজিলের আমাজন বনের যে গভীর অংশে অবৈধভাবে প্রাণী শিকার, খনন ও বননিধন হয় সেই অংশ থেকে চলতি মাসের শুরুর দিকে (৫ জুন) এ দুজন নিখোঁজ হন। পেরুর সীমান্তবর্তী ব্রাজিলের জাভারি উপত্যকার কোনো এক নদীতে নৌকা নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। তারপর থেকে আর কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছিল না তাদের। তাদের নিখোঁজ হওয়ার খবরে তোলপাড় শুরু হয়।

এরপর তাদের খোঁজে পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়। এমনকি নামানো হয় সেনাবাহিনী। কয়েকদিন অনুসন্ধানের পর চলতি সপ্তাহে অপহরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে স্থানীয় দুই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। আমারিলদো ও ওসেনি দা কস্টা ডি ওলিভেরা নামের এ দুই ব্যক্তি সম্পর্কে দুই ভাই। তাদের আটকের মধ্যদিয়ে সেনাবাহিনীর প্রায় ১০ দিনের খোঁজাখুঁজি শেষ হয়।

আটক ওই দুই ভাই সাংবাদিক ডম ও আদিবাসী বিশেষজ্ঞ ব্রুনোকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। শুধু তাই নয়, তাদের মরদেহ কোথায় পুঁতে রাখা হয় সেটাও জানান তারা। দুই ভাইয়ের দেয়া তথ্য অনুসারে, তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

শনিবার (১৮ জুন) পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধার হওয়া দুটি মরদেহের একটি ফিলিপসের আরেকটি আদিবাসী বিশেষজ্ঞ ব্রুনো পেরেইরার। গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, বনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মরদেহ দুটি পাওয়া যায়। এদিকে তাদের খোঁজ পাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানায় ডম ফিলিপসের পরিবার।

এক বিবৃতিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, যারা ডন ফিলিপসকে খুঁজে বের করার চেষ্টায় অংশগ্রহণ করেছেন, বিশেষ করে সেসব আদিবাসী গোষ্ঠী যারা আক্রমণের আলামত জোগাড় করতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

ফিলিপসের পরিবার আরও জানায়, আমাজনের জঙ্গল সংক্রান্ত একটি বই লেখার কাজ করছিলেন ডম। সেই গবেষণাতেই ব্রুনোকে সঙ্গী করে পাড়ি দিয়েছিলেন জঙ্গলে। কিন্তু তার গবেষণা ক্ষেত্রটি আদতে চোরাই কাঠ পাচারকারী, চোরাশিকারি, অবৈধ সোনা খনন, বিশেষ করে মাদক পাচারকারিদের স্বর্গরাজ্য।

ফলে ফিলিপসদের সেখানে আনাগোনা বিন্দুমাত্র ভালো চোখে দেখেনি অনেকেই। এমনকি তাকে হুমকি দিয়েও ফোন এসেছিল বলে জানায় তার পরিবার। ডম ফিলিপস গার্ডিয়ান পত্রিকার কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতেন। একটি বইয়ের জন্য গবেষণার কাজে তিনি আমাজনে গিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *