গুজরাট দাঙ্গা থেকে মোদিকে দায়মুক্তির রায় বহাল

আন্তর্জাতিক

জুন ২৫, ২০২২ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

২০০২ সালে গুজরাটে ঘটে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সে সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভারতের বর্তমান হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (২৪ জুন) ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নরেন্দ্র মোদিকে দায়-মুক্ত করে দেওয়া গুজরাটের আদালতের রায় বহাল রাখে। খবর বিবিসি।

২০০২ সালে দাঙ্গার সময় অন্তত এক হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। দাঙ্গার শুরু থেকে অভিযোগ উঠে সে সময়ের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। আভিযোগে বলা হয়, রাজ্য সরকার পরোক্ষভাবে দাঙ্গায় উসকানি দিয়েছে এবং সে সময়ের হত্যাযজ্ঞ থামাতে ইচ্ছাকৃতভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি।

এর জেরে ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নরেন্দ্র মোদির ভিসার আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল।

তবে ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টের নিয়োগ করা একটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে গুজরাট দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়।

কিন্তু সে রায়ের বিরুদ্ধে গুজরাটে আপিল করেন দাঙ্গায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার রাজ্যের মুসলিম রাজনীতিক এবং কংগ্রেস এমপি এহসান জাফরির বিধবা স্ত্রী জাকিয়া জাফরি। কিন্তু আদালত ২০১৩ সালে এক রায়ে তার আপিল আবেদন খারিজ করে দেয়।

এর পর সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন মিসেস জাকিয়া জাফরি। সেখানে দাঙ্গা নিয়ে নতুন করে তদন্তের আবেদন করেন তিনি। মামলায় তার অভিযোগ ছিল তদন্তে ‘ষড়যন্ত্রকারীদের সুরক্ষা’ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার (২৪ জুন) এক রায়ে যুক্তির ঘাটতি থাকার কথা বলে মিসেস জাফরির আপিল আবেদন খারিজ করে দেয় এবং নরেন্দ্র মোদিকে দায়-মুক্ত করে দেওয়া গুজরাটের আদালতের রায় বহাল রাখে।

গুজরাট রাজ্যের পুলিশ দাঙ্গার প্রথম তদন্ত করে। এর পর ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে তদন্তের জন্য একটি নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১২ সালে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দাঙ্গায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আহমেদাবাদের মুসলিম অধ্যুষিত গুলবাগ এলাকায় সশস্ত্র হিন্দুদের যে হামলায় এমপি এহসান জাফরি সহ ৩৫ জন মুসলিম মারা গিয়েছিল সে ঘটনার তদন্তেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে অভিযুক্ত ৬৩ জন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এর পরেও মিসেস জাফরি অভিযোগ করে আসছেন, দাঙ্গার সময় পুলিশসহ রাজ্য সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা নিস্ক্রিয় ছিলেন এবং পরোক্ষভাবে সহিংসতায় ইন্ধন দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *