সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ ৮:০১ অপরাহ্ণ
জয়দেব চক্রবর্ত্তী, যশোর
যশোরের কেশবপুরে সম্পূর্ণ জৈব সার ব্যবহার করে বিষমুক্ত মাল্টা চাষে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কৃষক খন্দকার শফি। তার বিষমুক্ত এ ফলের চাহিদাও রয়েছে বেশ। এবং এর প্রশংসা এখন মানুষের মুখে মুখে।
বিষমুক্ত ফল মানুষকে খাওয়ানোর উদ্দেশ্যেই উপজেলার ব্রহ্মকাটি গ্রামের কৃষক খন্দকার শফি আড়াই বছর আগে প্রথম ৬২ শতক জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে ৩০০টি মাল্টা চারা রোপণ করেন। গতবছর ওই খেতের শতাধিক গাছে ফলন আসে। প্রথমবার ৬০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন। এ থেকে তার মাল্টা চাষের প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। পরে ৩৬ শতক জমিতে আরও একটি বাগান তৈরি করেন। দুটি বাগানেই মাল্টার গাছ রয়েছে ৭০০। এবার ওই দু’বাগানের প্রায় ৫০০ গাছেই ফল এসেছে।
সরেজমিন ব্রহ্মকাটি গ্রামের ওই মাল্টা বাগান দুটিতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় গাছেই ৩০ থেকে ৬০টি পর্যন্ত ফল ধরেছে। মাল্টার আকারও বেশ বড়। কৃষক খন্দকার শফি বাগান পরিচর্যার সময় বলেন, প্রাথমিকভাবে মাল্টা চাষ করে ভাল ফলন পাওয়ায় গত আড়াই বছরে ৩টি মাল্টা বাগান তৈরি করেছি। এবার উপজেলার গড়ভাঙ্গা বাজারের পাশে ৪ বিঘা জমিতে ৪০০ মাল্টার চারা রোপণ করে তার পরিচর্যা নেওয়া হচ্ছে। আগামী বছর এ মাল্টা বাগানেও ফলন ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে। ৩টি বাগানেই যে চারা রোপণ করা হয়েছে তা তার নিজেরই তৈরি। এ বছর দুটি বাগান থেকে তিনি প্রায় আড়াই লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন।
মাল্টা বাগান তৈরি করার বিষয়ে বলেন, যেভাবে শিশুদের লালন পালন করে বড় করা হয়; ঠিক সেভাবে মাল্টা চারা রোপণের পর থেকে এর পরিচর্যা করতে হয়। বিষমুক্ত ফল মানুষকে খাওয়ানোই তার প্রধান উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, জৈব সার ব্যবহার করে তিনি ৩টি মাল্টা বাগান তৈরি করেছেন। ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) ব্যবহারের পাশাপাশি ডিমের খোসা, ঝিনুক গোড়াও জমিতে প্রয়োগ করেন। রাসায়নিক সার সামান্য ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
কৃষক খন্দকার শফি আরও জানান, তার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে অনেকেই মাল্টা বাগান গড়ে তুলছেন। এছাড়া তার খেতে কাজ করে অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
ব্রহ্মকাটি গ্রামের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, কৃষক খন্দকার শফির বাগানের মাল্টা খেতে খুবই সুস্বাদু। বাগানের ফলও আকারে বড়। যে কারণে তার বাগানের অধিকাংশ ফলই খেত থেকেই বিক্রি হয়ে যায়। বাগানের পরিচর্যাকারী হিসেবে কাজ করার সময় দীন মোহাম্মদ বলেন, প্রতিদিন বাগান থেকেই মানুষ এসে মাল্টা কিনে নিয়ে যান।
শিক্ষক নূরুল ইসলাম খান বলেন, বিষমুক্ত ফল উৎপাদনে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন খন্দকার শফি। বিষমুক্ত মাল্টা আবাদ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়াও ফেলেছেন।