‘এশীয় ন্যাটো’ ঠেকাতে সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত উত্তর কোরিয়ার

আন্তর্জাতিক স্লাইড

জুলাই ৫, ২০২২ ৯:১৭ পূর্বাহ্ণ

উত্তর কোরিয়াকে টার্গেট করে এশিয়ায় সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে উত্তর আমেরিকার দেশটি। ওয়াশিংটনের এ তৎপরতাকে ভালোভাবে নেয়নি পিয়ংইয়ং।

দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ত্রি-দেশীয় ওই চুক্তিকে এশিয়ায় ন্যাটোর মতো একটি জোট গঠনের পরিকল্পনা বা ‘এশীয় ন্যাটো’ হিসেবে উল্লেখ করেছে কোরীয় কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, নবগঠিত ‘এশীয় ন্যাটো’র মোকাবিলায় নিজেদের সামরিক সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দিয়েছে তারা।

রোববার (৩ জুলাই) উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘উত্তর কোরিয়াকে প্রায়ই হুমকি হিসেবে তুলে ধরে যে গুজব ছড়ানো হয়, তার উদ্দেশ্য যে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক কর্তৃত্ব সৃষ্টি করা তা বাস্তবতার দিকে খেয়াল করলেই স্পষ্ট হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে দ্রুততার সঙ্গে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য দেশের (উত্তর কোরিয়া) প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা দরকার।’

সম্প্রতি স্পেনের মাদ্রিদে হয়ে যাওয়া ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনের ফাকে এক বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একমত হন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নেতারা। বিবিসি জানায়, উত্তর কোরিয়াকে রুখতে প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্র আরও অস্ত্র মোতায়েন করবে।

এর জবাবে রোববার উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে নির্লজ্জভাবে যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এশীয় ঘরানার ন্যাটো প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিবৃতিতে মূলত যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সাম্প্রতিক এক সামরিক মহড়ার কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে নৌ মহড়া চালায়। ওই মহড়ায় প্রথমবার কোনো মার্কিন বিমানবাহিনীর রণতরীও ছিল।

চলতি বছর একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো উত্তর কোরিয়া তাদের আশপাশে যুক্তরাষ্ট্রের এসব মহড়াকে পিয়ংইয়ংয়ের শাসনক্ষমতা পরিবর্তনের লক্ষ্যে যুদ্ধপ্রস্তুতি হিসেবে দেখে আসছে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ‘কূটনৈতিক যোগাযোগ’ ও ‘শর্তহীন আলোচনার’ কথাগুলো যে ভাড়ামি; তাদের এসব মহড়া সেটাই প্রমাণ করে। একইসঙ্গে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা যে যুক্তরাষ্ট্র এখনও ছাড়েনি তাও উন্মোচিত করছে।’

তাদের এ বিবৃতিতে পারমাণবিক বা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ব্যাপারে কোনো উল্লেখ না থাকলেও তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বৈরি নীতিই তাদেরকে প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার দিকে ধাবিত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা আমাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ডকে দমিয়ে রাখার জন্য আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জালানোর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করিয়েছে।’

উত্তর কোরিয়া যেন তাদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার বিসর্জন দেয়, সেজন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন পিয়ংইয়ংকে একাধিকবার ‘যে কোনো সময় শর্ত ছাড়া আলোচনায়’ বসার প্রস্তাবও দিয়েছে। উত্তর কোরিয়া সেসব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *