এক শতাংশ ধনীর পকেটে বিশ্বের ৬৩ শতাংশ সম্পদ

এক শতাংশ ধনীর পকেটে বিশ্বের ৬৩ শতাংশ সম্পদ

আন্তর্জাতিক স্লাইড

জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

কোভিড মহামারি শুরুর পর গত দুবছরে তৈরি হওয়া ৪২ ট্রিলিয়ন ডলারের মধ্যে ২৬ ট্রিলিয়ন বা ৬৩ শতাংশ অর্থ গেছে অতি ধনী হিসেবে পরিচিত বিশ্বের মাত্র এক শতাংশ মানুষের ঝুলিতে। বাকি ১৬ ট্রিলিয়ন ভাগ হয়েছে বাদবাকি ৯৯ শতাংশ মানুষের মধ্যে।

রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম আরটি জানায়, সুইজারল্যান্ডের ডাভোস শহরে শুরু হওয়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনকে সামনে রেখে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) অক্সফামের ওয়েবসাইটে ‘সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ শিরোনামে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব তথ্য।

শুধু মহামারিই নয়, কোভিডের আগে থেকেই ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে বলে জানিয়েছে অক্সফ্যাম। গত এক দশকে তৈরি হওয়া সব সম্পদের অর্ধেকই রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এক শতাংশ মানুষের কাছে।

বিশ্বের ৯০ শতাংশ মানুষের আয় করা প্রতি ১ ডলারের বিপরীতে একজন বিলিয়নিয়ারের পকেটে গেছে ১৭ লাখ ডলার। বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের ধনভান্ডারে যোগ হচ্ছে ২৭০ কোটি ডলার। গত এক দশকে দ্বিগুণ হয়েছে বিলিয়নিয়ারদের সংখ্যা। একই সময়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে তাদের সম্পদও।

২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে পাল্লা দিয়ে ধনপতিদের সম্পদ বাড়ার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধির। বিশ্বের ৯৫টি খাদ্য ও জ্বালানি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মুনাফা ২০২২ সালে দ্বিগুণ হয়েছে। একই সময়ে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির সম্পদ ৪৬ শতাংশ বা ৪২ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে।

বিশ্বের ১৭০ কোটি শ্রমিক বসবাস করছে মূল্যস্ফীতিতে আক্রান্ত দেশগুলোতে। বিশ্বের প্রতি দশজন মানুষের একজন রয়েছে অনাহারে। আর এ অনাহারে থাকা মানুষের ৬০ শতাংশই নারী ও মেয়ে শিশু।

এমনকি করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্বাভাবিক মুনাফা প্রবৃত্তি থেকে রক্ষা পাচ্ছে না উন্নত দেশগুলোও। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বেড়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অতি মুনাফা।

অতিধনীরা নানা উপায়ে কর সুবিধা রেয়াতের সুবিধা পাচ্ছে; অন্যদিকে বিশ্বের অনেক দেশেই ধনীদের থেকে বেশি হারে কর দিতে হচ্ছে দরিদ্রদের। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ইলন মাস্কের দেয়া প্রকৃত কর ছিল তার আয়ের মাত্র ৩ শতাংশ। অপরদিকে দিনে দুই ডলার আয় করা উগান্ডার একজন আটা বিক্রেতা নারীকে কর দিতে হয়েছে আয়ের ৪০ শতাংশ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বর্তমান সময়েই সবচেয়ে বেশি ধনবৈষম্য ও দারিদ্র্য তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে অক্সফাম বিশ্বের অতি ধনীদের ওপর ব্যাপকভাবে কর আরোপের দাবি জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *