একনজরে ‘খাদেম-ই-আলা’ শাহবাজ শরিফ

আন্তর্জাতিক স্লাইড

এপ্রিল ১২, ২০২২ ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মিয়া মোহাম্মদ শাহবাজ শরিফ। সোমবার দেশটির জাতীয় পরিষদের ৩৪২টি আসনের মধ্যে ১৭৪টির সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

আগের দিন অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ইমরান খান। যদিও ১৫৫টি আসন নিয়ে পার্লামেন্টে সবচেয়ে বড় দল পিটিআই অধিবেশন বর্জন করে জাতীয় পরিষদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শাহবাজ শরিফের জন্ম ১৯৫০ সালে। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের প্রধান ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই তিনি।

পাঞ্জাব প্রদেশের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতায় আসলে বড় ভাইয়ের সঙ্গে সৌদি আরবে তিনি নির্বাসনে যান। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ থেকে ২০১৩ ও ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আবারও একই দায়িত্ব পালন করেন এই প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।

সর্বশেষ ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআইয়ের শাসনামলে জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকায় ছিলেন শাহবাজ। মুখ্যমন্ত্রীর বদলে নিজেকে খাদেম-ই-আলা বা প্রধান সেবক পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন তিনি।

মিয়া মোহাম্মদ শরিফের দ্বিতীয় পুত্র শাহবাজ একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। যৌথভাবে তিনি ইত্তেফাক গ্রুপ অব কোম্পানির মালিক। ১৯৮৫ সালে তিনি লাহোর চেম্বার অব কমার্স ও ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৮৮ সালে প্রথম পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির এমপি নির্বাচিত হন। আর ১৯৯০ সালে তিনি জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন। এরপর ১৯৯৩ সালে আবার প্রাদেশিক পরিষদের ভোটে দাঁড়ান তিনি। সেখানে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির বিরোধী দলের নেতার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পার্লামেন্ট ভেঙে দিলে তার মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।

১৯৯৭ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশের সেবা করার সুযোগ পান। ১৯৯৯ সালে পারভেজ মোশাররফের অভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

এক দশক নির্বাসনে থেকে ফের ২০০৮ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন। দ্বিতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর তিনি প্রদেশটির তিনটি আসনে নির্বাচন করে সবগুলোতে জয়ী হন। তার বড় সফলার মধ্যে রয়েছে পাঞ্জাবের মেট্রো বাস প্রকল্প।

তার ছেলে হামজা শাহবাজ শরিফও একজন প্রাদেশিক এমপি। পরবর্তী নির্বাচনে তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। পিটিআইয়ের শাসনামলে প্রাদেশিক পরিষদের বিরোধী দলীয় নেতার ভূমিকা রাখেন হামজা।

২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থী ছিলেন শাহবাজ শরিফ। কিন্তু কেবল লাহোরের একটি আসনে জয়ী হন। যদিও পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদের দুটি আসনে তিনি জিতে যান। তখন জাতীয় পরিষদে তাকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রার্থী করা হলে ইমরান খানের কাছে হেরে যান। ৯৬ এমপি তাকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত শাহবাজ। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার দৃশ্যমান সফলতা রয়েছে। নওয়াজ শরিফ বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক সংকটে পড়লেও পাশে থেকে ভাইকে সমর্থন দিয়ে গেছেন তিনি। তবে সামরিক-বেসামরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নওয়াজের চেয়ে তার সুর অনেকটা নরম।

২০১৮ সালে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পাকিস্তানের সংকট মোকাবিলায় সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *