ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১৬২

ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১৬২

আন্তর্জাতিক স্লাইড

নভেম্বর ২২, ২০২২ ৭:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃত বেড়ে ১৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৭ শতাধিক মানুষ।

বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, সোমবার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর শহরের কাছে। এটি ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভূমিকম্পে জাভা দ্বীপের পাশাপাশি রাজধানী জাকার্তার বহুতল ভবনও কেঁপে ওঠে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, চিয়ানজুর থেকে ১০০ কিমি দূরে রাজধানী জাকার্তায়ও ভূকম্পন বেশ জোরেই অনুভূত হয়। এ সময় রাজধানীর উঁচু ভবনগুলো থেকে আতঙ্কে মানুষজন ছুটে বাইরে বেরিয়ে আসে।

কর্মকর্তারা সাবধান করে বলেন, মূল ভূমিকম্পের পর ছোট একাধিক ভূকম্পন হতে পারে, এবং হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

চিয়ানজুরের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা হারমান সুহারমান সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পরপর কমপক্ষে ৪৬ জন মারা যান। অনেক জায়গা থেকে নতুন নতুন মরদেহ এবং আহত মানুষজন নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৬২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দক্ষিণ জাকার্তার বাসিন্দা ভিদি প্রিমাধানিয়া বলেছেন, শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আমার সহকর্মীরা এবং আমি জরুরি সিঁড়ি ব্যবহার করে নবম তলায় আমাদের অফিস থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

এক বিবৃতিতে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা বলেছে, সিয়াঞ্জুরের বেশ কিছু বাড়িঘর এবং একটি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন।

মেট্রো টিভির ফুটেজে দেখা যায়, সিয়াঞ্জুরের কিছু ভবন একেবারে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। কিছু বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে অনেক বাসিন্দা ধ্বংসস্তুপের নিচে তল্লাশি চালাচ্ছেন।

দেশটির আবহাওয়া, জলবায়ু ও ভূপদার্থবিজ্ঞান সংস্থা (বিকেএমজি) বলেছে, সোমবার জাভায় যে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তাতে সুনামির কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে ভূমিকম্প পরবর্তী আফটারশক অনুভূত হতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছে সংস্থাটি।

প্রশান্ত মহাসাগরের তথাকথিত ‘রিং অব ফায়ারে’ ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা দেখা যায়। এখানে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ঘটে। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব দেশই এ কারণে ভূমিকম্পের অত্যধিক ঝুঁকিতে আছে।

২০০৯ সালে পাদাংয়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এক হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হন আরো অনেকে। এছাড়া ভূমিকম্পে বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনাও ধ্বংস হয়ে যায়।

২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পরপর আঘাত হানে সুনামি। তখন ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *