নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। শনিবার (১৬ জুলাই) রাতে দেশটির পার্লামেন্টে বিশেষ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য ঘোষণা করেন স্পিকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৯ জুলাই পদটির জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। একজনের বেশি প্রার্থী হলে ২০ তারিখে হবে ভোট।
এদিকে দেশটির চলমান অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিতে পারে চীন।
শনিবার (১৬ জুলাই) কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টে শুরু হয় বিশেষ অধিবেশন। ১৩ মিনিটের ওই অধিবেশনে বেশ কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ায় পদটি শূন্য ঘোষণা করেন স্পিকার।
পার্লামেন্টের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্পিকারের কাছে ১৯ জুলাই প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে হবে। একজনের বেশি প্রার্থী হলে ২০ তারিখে হবে ভোট। তবে এখন পর্যন্ত এ পদের জন্য চারজনের নাম শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেও একজন প্রার্থী।
২২৫ জনের পার্লামেন্টে গোতাবায়ার দল এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় রনিলের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে বিরোধী দলীয় প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসাও লড়াই করতে পারেন বলে জানাচ্ছে দেশটির গণমাধ্যম। নতুন প্রেসিডেন্ট ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইতোমধ্যে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। প্রথমে তিনি মালদ্বীপ যান, সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে গিয়ে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ার্দেনা বলেন, গোতাবায়া বৈধভাবে প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়েছেন। যা গতকাল থেকে কার্যকর হবে।
স্পিকার আবেওয়ার্দেনা আরও জানিয়েছেন, ২২৫ জন পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। প্রেসিডেন্টের পদ দখলের লড়াইয়ে যে চার জনের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- প্রধানমন্ত্রী ও ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমাদাসা, প্রবীণ সাংবাদিক থেকে পার্লামেন্ট সদস্য ডলাস অলহাপেরুমনা ও সাবেক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল শরৎ ফনসেকা।
এদিকে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কাকে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দিতে পারে চীন। দেশটির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বেইজিংয়ে নিযুক্ত লঙ্কান রাষ্ট্রদূত। আর দেশের চলমান জ্বালানি সংকট সমাধানে রাশিয়ার দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী।
শনিবার (১৬ জুলাই) চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহতদের স্মরণ করেন সাধারণ মানুষ। মোমবাতি জ্বালিয়ে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।
করোনার ধাক্কায় ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট পার করছে শ্রীলঙ্কা। এতে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আগের মতো অবস্থায় ফিরে যাওয়ার হুমকিতে পরে। এ ছাড়া দেশটির টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।