রূপকথার গ্রাম, যেখানে নেই কোনো রাস্তা

ফিচার স্পেশাল

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২ ১২:০৮ অপরাহ্ণ

নেদারল্যান্ডসের ছোট এবং সুন্দর একটি গ্রামের নাম গিয়েথুর্ন। সবুজে ঘেরা এই গ্রাম পর্যটকদের কাছেও খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু কেন জানেন?

যদি ভাবেন, এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকেরা এই গ্রামে বারবার ছুটে আসেন, তাহলে কিছুটা ভুল ভাবছেন। আসলে এই গ্রামে এমন এক বিশেষত্ব রয়েছে, যা বিশ্বের অন্য কোনো গ্রামে নেই। এই গ্রামে যাতায়াতের জন্য কোনো রাস্তা নেই। রাস্তা নেই, তাই কোনো গাড়ি নেই। আর গাড়ি নেই তাই গ্রামে হর্নের কোনো কোলাহলও নেই। সারাদিনই শান্ত থাকে প্রকৃতি।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকেরা এই গ্রামে বারবার ছুটে আসেন

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পর্যটকেরা এই গ্রামে বারবার ছুটে আসেন

যাতায়াতের যদি রাস্তাই না থাকে, তাহলে গ্রামের মানুষেরা যাতায়াত করেন কীভাবে? সবটাই হয় জলপথে। গ্রামের প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে জলপথ। আর এই জলপথেই গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে যান বাসিন্দারা। এর জন্য যে নৌকা ব্যবহার করা হয়, গ্রামের শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে তাতে নীরব ইঞ্জিন লাগানো থাকে। এই বিশেষত্বই গ্রামটাকে অনন্য করে তুলেছে। এই গ্রামে সবচেয়ে জোরে যে শব্দ শোনা যায়, তা হয়তো কোনো হাঁসের ডাক বা অন্য কোনো পাখির ডাক।

জলপথেই গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে যান বাসিন্দারা

জলপথেই গ্রামের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে যান বাসিন্দারা

কেন এই গ্রামে কোনো রাস্তা নেই? এই গ্রামকে নেদারল্যান্ডস-এর ভেনিসও বলা হয়। ১২৩০ সালে এই ম্যাজিকাল গ্রামের প্রতিষ্ঠা হয়। এই গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মাটির নিচে ছোট বড় ফাঁপা অংশ ছিল। গ্রামে মানুষ বসবাস শুরু করার পর, সেগুলো খুঁড়ে বার করতে শুরু করল। বছরের পর বছর ধরে সেগুলো খুঁড়ে বার করার ফলে গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো হ্রদ তৈরি হয়। সেগুলোকেই জুড়ে জুড়ে ক্যানাল রোড তৈরি হয়েছে।

দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে ১৫০টিরও বেশি সেতু

দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে ১৫০টিরও বেশি সেতু

গ্রামের বিভিন্ন দিক থেকে এই ক্যানাল বা খাল চলে যাওযায় গ্রামটাও ছোট ছোট দ্বীপে পরিণত হয়েছে। সেই দ্বীপগুলোর মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করেছে ১৫০টিরও বেশি সেতু। গ্রামটা বিশ্বের নজরে আসে ১৯৫৮ সালে। ডাচ ফিল্মমেকার বার্ট হান্সট্রা  তার কমেডি ফিল্ম ‘ফ্যানফেয়ার’-এর শুটিং এই গ্রামে করার পর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *