যে মসজিদে ৭০ জন নবী নামাজ আদায় করেছেন

ধর্ম

জুন ২৬, ২০২২ ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ

সৌদি আরবের দক্ষিণ মিনার আল-দিবাআ পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত ঐতিহাসিক মসজিদুল খাইফ। এই স্থানে মহানবী (সা.), মুসা (আ.)-সহ ৭০ জন নবী নামাজ আদায় করেছেন। এ জন্য একে নবীদের মসজিদও বলা হয়।

মক্কা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। মিনায় হাজিদের জন্য স্থাপিত বিশেষ তাঁবুতে অবস্থান করে হজের বেশকিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। হজের আনুষ্ঠানিকতার অন্যতম অংশ হলো- শয়তানের প্রতীকী স্তম্ভে কঙ্কর নিক্ষেপ করা। এই কঙ্কর নিক্ষেপের স্থানের খুব কাছে ঐতিহাসিক ‘মসজিদে খায়েফ’ অবস্থিত। এই মসজিদে ৭০ জন নবী সালাত আদায় করেছেন।

১৯৮৭ সালে ২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে মসজিদুল খাইফ সম্প্রসারণ করা হয়। এ সময় চারটি মিনার নির্মাণ করা হয়। হাজিদের সুবিধার্থে তখন তাতে ৪১০টি এসি, ১১০০ বৈদ্যুতিক পাখা, এক হাজার টয়লেট ও তিন হাজার পানির কল স্থাপন করা হয়। হজ পালনের সময় হাজিরা মিনায় অবস্থান করেন এবং এখানে দোয়া কবুল হয় বলে ধারণা করা হয়।

সওর পাহাড়ের বিপরীত দিকের পাহাড়ের অদূরে প্রতিষ্ঠিত এই মসজিদের আলোচনা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে। বিশাল মসজিদটি কঙ্কর নিক্ষেপ করতে আসা হাজিদের মনে করিয়ে দেয় ইতিহাসের অনেক ঘটনাকে। বৃহদাকার মসজিদের উচুঁ মিনারগুলো বেশ দূর থেকে পাহাড়ের চূড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

বর্ণিত আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এই মসজিদে সালাত আদায় করছেন এবং বলেছেন, এখানে সত্তরজন নবী সমাহিত হয়েছেন।

নবী করিম (সা.) বিদায় হজে মসজিদে খায়েফে সালাত পড়েছেন। এই মসজিদের অনেক ফজিলত হাদিস ও ইতিহাসের গ্রন্থসমূহে উল্লেখ আছে। পাহাড়ের চেয়ে নিচু এবং সমূদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচু স্থানকে আরবি পরিভাষায় খায়েফ বলা হয়। আবার দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী উপত্যকাসম ভূমিকেও খায়েফ বলে আরবরা।

অপরদিকে, খায়েফ মসজিদ হচ্ছে মক্কার কাফেরদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের বিজয়ের এক স্মৃতিচিহ্ন।ইতিহাসে এসেছে, পঞ্চম হিজরিতে ইহুদিদের প্ররোচনায় মক্কার কাফেররা মদিনায় হামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ লক্ষ্যে তারা কিছু আরব গোত্রের সঙ্গে সন্ধি চুক্তি করে। এই সন্ধি চুক্তি করার জন্য মক্কার কাফেররা যে স্থানটি বেছে নেয় পরে সেখানেই খায়েফ মসজিদ নির্মিত হয়।

হাদিসে মসজিদুল খাইফের বর্ণনা: আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ৭০ জন নবী মসজিদুল খাইফে নামাজ আদায় করেছেন। (মাজমাউল জাওয়াইদ)

ইয়াজিদ ইবনে আসওয়াদ (রা.) বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ করেছেন এবং নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে মসজিদুল খাইফে ফজরের নামাজ আদায় করেছেন।

আবদুর রহমান ইবনে মুয়াজ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মিনায় একটি ভাষণ দেন। তখন তিনি মুহাজিরদের মসজিদুল খাইফের সামনে এবং আনসারদের মসজিদের পাশে তাঁবু স্থাপন করতে বলেন। (সুনানে আবি দাউদ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *