আপনি সর্বোচ্চ কত বছর পর্যন্ত কাজ করে যেতে পারবেন? সর্বোচ্চ হয়তো ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত। কিন্তু ৯১ বছর বয়সেও পুলিশের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন লন্ডনের ক্যামডেন শহরের এলসি ‘বাকশট’ স্মিথ। বর্তমানে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক কর্মরত পুলিশ অফিসার।
তবে বয়স নব্বইয়ের কোঠা পেরোলেও এখনই অবসর নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার। আগের মতো এখন আর দ্রুত চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। তাতে কিন্তু বাকশট থেমে নেই। আরকানসাসে নিজ শহরের রাস্তায় ঠিকই টহল দিয়ে বেড়ান। সপ্তাহে চারদিনই কাজ করে চলেছেন।
কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছেন অনেক
৪৬ বছর ধরে ডেপুটি হিসেবে কাজ করার পর তিনি অবশ্য একবার অবসর নিয়েছিলেন। কিন্তু পাঁচ মাসের বেশি আর মন টেকেনি। পরে আবার ৮০ বছর বয়সে পুনরায় কাজে যোগ দেন। নতুন পুলিশ হিসেবে শুরু হয় তার কর্মজীবন।
বাকশট তার সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করে যেতে চান। অবসরের কথা জিজ্ঞেস করলে পরিহাস করে বলেন, যখন ঈশ্বরের ইচ্ছা হবে, তখনই চিরতরে অবসরে যাবেন তিনি।
২০১১ সালের জানুয়ারিতে অবসর থেকে ফেরার পর অফিসার স্মিথ আর পেছনে তাকাননি। তিনি গত এক দশক ধরে আনন্দের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সকাল ৭টা থেকে শুরু করে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কাজ করেন স্মিথ। তিনি পুলিশের বেইলিফ হিসেবে কর্মরত। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে স্কুলে টহল, প্যারেডে নেতৃত্বদান ইত্যাদি কমিউনিটি ওয়াচের দায়িত্বও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন তিনি। জীবনে তিনি যত মানুষকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিয়ে গেছেন, তারচেয়ে বেশিজনকে পৌঁছে দিয়েছেন বাড়ি।
নিষ্ঠার সঙ্গে পুলিশি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বাকশট স্মিথ
নব্বইয়ের ঘরে পা রাখা এই পুলিশ সদস্য পুলিশের বিশেষ গাড়ি না চালিয়ে সাধারণ গাড়িই চালান। তবে পুলিশের ইউনিফর্ম পরতে ভুলেন না। সেইসঙ্গে অস্ত্রও বহন করেন। যদিও তাকে কখনো অস্ত্র ব্যবহার করতে হয় না।
স্থানীয় মেয়র জুলিয়ান লটের ভাষায়, বাকশটের কাছে এর চেয়েও শক্তিশালী অস্ত্র আছে! লট বলেন, ‘তিনি আপনার মা থেকে দাদি- সকলকেই চিনেন। সুতরাং, আপনার জীবনযাপন নিয়ে কথা বলার অধিকার তার রয়েছে।’
তবে অস্ত্র কিংবা পরিধেয় ব্যাজ নয়, বরং আচরণই তাকে একজন ভালো অফিসারে পরিণত করেছে বলে বিশ্বাস স্মিথের। যখন-তখন মানুষকে গ্রেপ্তার করার বদলে তিনি তাদের প্রতি সহমর্মী হওয়ার চেষ্টা করেন।