দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় স্লাইড

ডিসেম্বর ৬, ২০২২ ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। অনেক উন্নত দেশ অর্থনৈতিকভাবে বিপদে এবং সমস্যার সম্মুখীন, তাদের রিজার্ভ কমছে। সেই অবস্থায় আমরা বাংলাদেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় রাখতে পেরেছি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং ব্যাংকে তারল্য নিয়ে ছড়ানো কোনো গুজব বা অপপ্রচারে কেউ কর্ণপাত করবেন না।

সোমবার মিরপুর সেনানিবাসের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২২ ও ‘আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স’ এর গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর কোভিডের আগে আওয়ামী লীগ তুলেছিল ৮ শতাংশের ওপরে। কিন্তু কোভিড-১৯ ও এর পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এগুলোকে কেন্দ্র করে স্যাংশনে অনেক উন্নত দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ধনী দেশগুলোও আজকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাদের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে, রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে এখনো আমরা স্থিতিশীল অবস্থায় রাখতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে- যখনই দেশ শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায়, তখন স্বার্থান্বেষী মহলের এটা পছন্দ হয় না। তারা নানা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে, গুজব ছড়ায়। এসব গুজব-মিথ্যা কথায় ভয় পাওয়া যাবে না। বরং দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে বেশি করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় রিজার্ভ পেয়েছিল মাত্র ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তখন সরকার সেই রিজার্ভ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ২০০৯ সালে আমরা রিজার্ভ পাই ৫ বিলিয়ন ডলার। যেটাকে আমরা ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। করোনার সময় যাতায়াত ও আমদানি বন্ধ ছিল। এজন্য রিজার্ভ জমে যায়। পরে সব চ্যানেল খুলে গেলে আমদানিতে রিজার্ভ ব্যয় করতে হয়েছে। ভ্যাকসিন কেনা, টিকা গবেষণায় অর্থ দেওয়াসহ করোনার চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয় করতে আমাদের অনেক টাকা লেগেছে। এগুলোর জন্য আমাদের ডলার খরচ হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, যখন ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা শুরু হয়, তখনই সরকার দেশের মানুষের জন্য ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ভ্যাকসিন বুকিং দেয়। অথচ অনেক উন্নত দেশও বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেয়নি। সেই সময় দেশের ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণিকে সরকার যে আর্থিক প্রণোদনা দেয়, তাতেও অর্থ ব্যয় হয় এবং তৃণমূল পর্যায়ে অর্থ সরবরাহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করে। এছাড়া রফতানি ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। ফলে করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি অর্থনীতিও ধরে রাখতে আমরা সক্ষম হই।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু মাটি ও মানুষকে পুঁজি করে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত পর্যায়ে রেখে যান। সবাইকে সেটা মনে রেখে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *