জাবিতে সহকারী প্রক্টরের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন

দেশজুড়ে

ডিসেম্বর ৬, ২০২২ ৩:৪৮ অপরাহ্ণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী প্রক্টর ও পাবলিক হেলথ্ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনি শিক্ষক নিয়োগে অনৈতিক পথ অবলম্বনের দায়ে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে জোটের সাধারণ সম্পাদক সামি আল জাহিদ প্রীতমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি সংসদের সভাপতি আবু সায়েম বলেন, ‘আজকের অভিযুক্ত শিক্ষক পদ পদবির লোভ দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের অনৈতিক কাজে প্রলুব্ধ করছে।

শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের শাস্তি হোক। অভিযুক্ত শিক্ষককে নৈতিক স্খলনের দায়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক এবং তদন্ত সাপেক্ষে তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানাই।’

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যম তার অপকর্ম দেখেছি৷ এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মানকে ক্ষুন্ন করেছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় কোন সরকারি কিংবা রাজনৈতিক ক্ষমতা চর্চার জয়গা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় একটি মুক্ত চিন্তার জায়গা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি শিক্ষক হবেন তিনি তার যোগ্যতা বলেই হবেন। কিন্তু ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের সাবেক সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে মেয়েদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার মাধ্যমে শিক্ষকতার চাকুরী দিয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

ভ্রুন হত্যা করার ঘটনা ঘটিয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের ২(ঘ), ৩(জ) এবং ৪(গ) বিধির লংঘন হয়েছে। একজন নিপীড়িকারী কিভাবে প্রক্টর হিসেবে থাকেন? এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের মধ্যে আছেন। এ ঘটনার পরে প্রশাসনের নিশ্চুপতা দেখে আমরা লজ্জিত হই।’

এ সময় তিনি দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে তাকে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অপসারণ করা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নতুন মানিকের উত্থান হয়েছে অপসারনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার দাবি করেন।

সমাপনী বক্তব্যে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, ‘একজন শিক্ষক আমাদের মধ্যে জ্ঞানের আলো জ্বালবেন কিন্তু তিনি যে কর্মকাণ্ড গুলো করছেন তা আমাদের জন্য ভয়ংকর লজ্জাজনক। এ ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিকরা যথেষ্ট তথ্যবহুল সংবাদ পরিবেশনা করেছেন।

এই সংবাদ গুলোর উপর ভিত্তি করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অতিসত্ত্বর সহকারী প্রক্টর পদ থেকে অপসারণের দাবি করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এমন একজন নীতিহীন শিক্ষকে প্রশাসনের দায়িত্বে দেখতে চাই না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কখনো কোন নিপীড়নকে প্রশ্রয় দেয়নি।

আমরা আশা করব একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে। এবং ঘটনা সত্য প্রমানিত হলে তাকে শিক্ষক পদ থেকেও বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষিকা আনিকা বুসরা বৈচির সাথে ঐ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির অন্তরঙ্গ ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর দেয়ালে পোস্টারিং করা হয়।

এ ঘটনার পরে জনির আরও বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কার্যক্রমের চিত্র ফাঁস হয়। এছাড়াও তিনি ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *