আটটি বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্রের সংগঠন ডি-৮ এর ১০ম সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সম্মেলনটি আগামী ৮ এপ্রিল ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবেন এবং বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক সভা হিসেবে আগামী ৭ এপ্রিল ভার্চুয়াল মাধ্যমে ১৯-তম ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স এবং তার আগে ৫-৬ এপ্রিল ৪৩ সেশন ফর ডি-৮ কমিশন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে আগামী ৫ এপ্রিল ডি-৮ বিজনেস ফোরাম এবং প্রথম ডি-৮ যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মোমেন জানান, এবারের সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ হিসেবে আগামী দুই বছর ডি-৮ চেয়ারের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। সম্মেলনে বর্তমান চেয়ার তুরস্ক বাংলাদেশকে ডি-৮ চেয়ারের দায়িত্ব হস্তান্তর করবে।
ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন এবং পরবর্তী দুই বছরের জন্য চেয়ারের দায়িত্ব পেতে যাওয়া বাংলাদেশ এরই মধ্যে ডি-৮ ঢাকা নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে। যেখানে আগামী দুই বছর বাংলাদেশের চেয়ার থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন তথ্য আপলোড করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, আসন্ন সম্মেলনে বাণিজ্য, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, শিল্প সহযোগিতা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, পরিবহন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং পর্যটন-এই ছয়টি ক্ষেত্রে আন্তঃডি-৮ সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ আন্তর্জাতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়ে সম্মিলিত নীতিগত অবস্থান গ্রহণ করা হবে।
ডি-৮ সদস্যভুক্ত দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ১৯৯৯ সালে ঢাকায় দ্বিতীয় ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে।
ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন এবং চেয়ারের দায়িত্ব পেলে বাংলাদেশ কীভাবে উপকৃত হবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে একইসঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। এ ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণে ঢাকায় দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করে বাংলাদেশ ওই সংস্থাটির পরবর্তী দুই বছরের সভাপতিত্ব লাভ করলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা তুলে ধরার নতুন দ্বার উন্মোচন এবং বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে প্রতীয়মান হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডি-৮ চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ এই সংস্থার অন্যান্য দেশগুলোর সহযোগিতায় ডি-৮ এর অব্যবহৃত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতাকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করতেও সক্ষম হবে। এছাড়াও ডি-৮ সিসিআই’র সভাপতি হিসেবে সংস্থাটির সদস্যভূক্ত দেশ থেকে বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণেও বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এবারের ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে ‘বৈশ্বিক রূপান্তরের জন্য অংশীদারিত্ব: যুব সম্প্রদায় ও প্রযুক্তি শক্তির মুক্তি’।